প্রতি বর্ষায় জোয়ারে প্লাবিত হয় দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ । অতিবৃষ্টির কারণে চাক্তাই খাল ও কর্ণফুলী নদীতে পানিপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় জোয়ারে বাজার প্লাবিত হওয়ারে আতঙ্কে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। এবারও হলো তাই।
বুধবার (১৭ জুলাই) চাক্তাইয়ের হামিদুল্লাহ বাজারে জোয়ারের সময় প্লাবিত হয় পুরো বাজার। ঘণ্টাখানেক হাঁটুসমান পানিতে ডুবে থাকে বাজার।
ব্যবসায়ীরা জানান, চাক্তাই খাল ভরাটের কারণে যে খাল একসময় বাণিজ্যের লাইফলাইন ছিল, তা আজ পরিণত হয়েছে ব্যবসায়ীদের মরণফাঁদে। গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে জোয়ারের পানি উঠলে আর নামছে না। আবর্জনায় খালের তলদেশ প্রায় ১০ ফুটের মত ভরাট হয়ে গেছে। এতে জোয়ারের পানি খাল উপচে বাজারে প্রবেশ করে। ফলে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পুরো বাজার থাকে পানিবন্দি।
আগে দোকানের সামনে উঁচু দেওয়াল দিয়ে দোকানে পানি ঢোকা ঠেকানো গেলেও, এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানির কারণে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে শত শত কোটি টাকা। আর সমস্যা সমাধানে দীর্ঘদিন ধরে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে বর্ষা মৌসুমে বাজারে পানি প্রবেশ বন্ধ করা যাচ্ছে না।
চাক্তাই হামিদুল্লা বাজার ব্যবসায়ী মো. সেকান্দর জানান, বুধবার জোয়ারে প্রায় হাঁটুসমান পানিতে ঘণ্টাখানেক বাজার ডুবে ছিল। তবে বৃষ্টি না থাকায় তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে আমরা আতঙ্কে আছি আসছে অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ার নিয়ে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সোলায়মান বাদশা জয়নিউজকে বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে গত এক সপ্তাহে বাজারে প্রায় হাজার কোটি টাকার মতো লেনদেন কম হয়েছে। তবে আমরা আতঙ্কে আছি আসছে জোয়ার নিয়ে। এতে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ পুরো বাজার ডুবে গিয়ে শত শত কোটি টাকার লোকসান হবে।
এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, এ সমস্যা সমাধানে চোখে পড়ার মতো কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হলে জাতীয় অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছর বর্ষা মৌসুমে কর্ণফুলীর জোয়ারের পানিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ বাজার। প্রায় প্রতিদিনই জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকত শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও বা কোমর সমান পানিতে অনেক মালপত্র নষ্ট হয়ে যায়। আগামী এক সপ্তাহ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে জোয়ারের পানিতে বাজার প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। আর এ বছর বাজারে জোয়ারের পানি প্রবেশ করলে ক্ষতির সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
জয়নিউজ/পিডি