ঘটনাটি পঞ্চাশ বছর আগের। পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো মহাজাগতিক বিশ্বে মানুষের পা পড়েছিল প্রথমবারের মতো। সেই থেকে মানুষের মহাজাগতিক অভিবাসন শুরু। দিনটি ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই। সেদিন আন্তর্জাতিক সময় রাত ৮টা ১৭ মিনিটে চাঁদে অবতরণ করে পৃথিবীর মনুষ্যবাহী প্রথম নভোযান অ্যাপোলো-১১।
এর ভেতর ছিলেন কমান্ডার নিল আর্মস্ট্রং ও অবতরকযানের পাইলট অ্যাডউইন বাজ অলড্রিন।
ওপরে মূল চন্দ্রযান উড়াচ্ছিলেন তাদের সহযোগী ক্রু মাইকেল কলিনস। এর ছয় ঘণ্টা পর প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদের পৃষ্ঠে পা রাখেন আর্মস্ট্রং। ১৯ মিনিট পর তাকে অনুসরণ করেন অলড্রিন। চন্দ্রজয়ের ওই ইতিহাস সরাসরি টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছিলেন ৬৫ কোটি মানুষ। এর মানে, ওই সময়কার পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার পাঁচ ভাগের এক ভাগই চাঁদে পা ফেলার দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছিলেন।
যদিও নানা ভিত্তিহীন গুজব আর ষড়যন্ত্র তত্ত্বের শিকার হয়ে অনেকে আজও সন্দেহ প্রকাশ করেন-আদৌ কি মার্কিন নভোচারীরা চাঁদে গিয়েছিলেন! অথচ আর্মস্ট্রং আর অলড্রিনই শুধু নন, মোট ১২ মার্কিন নভোচারী চাঁদের মাটিতে পা ফেলার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। অবশ্য ১৯৭২ সালের পর থেকে চাঁদে আর মানুষ পাঠায়নি, না যুক্তরাষ্ট্র আর না মহাকাশে তাদের প্রতিপক্ষ রাশিয়া, ইউরোপ কিংবা মহাকাশে অধুনা পরাশক্তি চীন ও ভারত।
চাঁদে অবতরণ সম্পর্কে আর্মস্ট্রং বলেছিলেন, এটা ‘একজন মানুষের জন্য ছোট্ট একটা পদক্ষেপ; কিন্তু মানবজাতির জন্য বিরাট অগ্রগতি।’ চাঁদে মানুষ যাওয়ার আগে মহাশূন্যে বেশ কতগুলো ধারাবাহিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। প্রথমে মহাশূন্যে পাঠানো হয়েছিল রাশিয়ার লাইকা নামে একটি স্ত্রী কুকুর। রাশিয়াই মহাকাশে প্রথম মানুষ পাঠিয়েছে-ইউরি গ্যাগারিন (১২ এপ্রিল, ১৯৬১) প্রথম মহাকাশচারী মানুষ, ভ্যালেনতিনা তেরেসকোভা (১৬ জুন, ১৯৬৩) প্রথম নারী মহাকাশচারী। এ ছাড়া চাঁদে সফলভাবে নভোযান অবতরণের বেলাতেও প্রথম রাশিয়া। তাদের লুনা-২ চন্দ্রযান ১৯৫৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ইমপ্যাক্ট তৈরি করে চাঁদে।