ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি বলেছেন, ‘৪৭ বছরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক-সামাজিকভাবে অনেক উন্নতি করেছে। বাংলাদেশের উন্নতি এখন বিশ্বের উদাহরণ। মাথা পিছু আয়, মানবসম্পদ, অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করায় বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত করার সুপারিশ দিয়েছে জাতিসংঘ।’
বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস।
বাংলাদেশে অতীতে কর্মরত থাকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ ঢাকায় ছিলাম। তারপর ২১ বছর পরে ২০১৭-তে চট্টগ্রাম আসি।’
সহকর্মীরা বলেছে, বাংলাদেশ খুব উন্নতি করেছে। কিন্তু এতটা উন্নতি করেছে এটা ভাবতে পারিনি। এজন্য বাংলাভাষী হিসেবে আমার খুব গর্ববোধ হয়- বাংলাদেশ এত উন্নতি করেছে- বলেন অনিন্দ্য ব্যানার্জী।
উন্নয়নের কৃতিত্ব বাংলাদেশের মানুষের মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এগিয়ে যাবার কৃতিত্ব সবার। তবে বেশি হলো, বাংলাদেশের মানুষ- খুব পরিশ্রমী। পরিশ্রম না করলে উন্নতি হয় না। আশাকরি বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরও উন্নতি করবে।’
এদিকে উপমহাদেশে জঙ্গিবাদ ঠেকাতে সংস্কৃতির চর্চা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন এই কূটনীতিক।
অনিন্দ্য ব্যানার্জি বলেন, ‘সংস্কৃতি চর্চা করতে আমরা সবাইকে উৎসাহিত করতে চাই। এই উপমহাদেশে সংস্কৃতি খুব জরুরি। কারণ আমাদের উপমহাদেশে আমাদের যুব সমাজ মাদক ও জঙ্গিবাদের দিকে যাচ্ছে। এটাকে ঠেকানোর জন্য, প্রতিরোধ করার জন্য সংস্কৃতি হলো সবথেকে বড় হাতিয়ার। তাই আমরা এটাতে বেশি জোর দিচ্ছি।
সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা ও চাঁদপুরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অন্য জায়গাতেও এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে চাই।
চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম তুলে ধরে অনিন্দ্য ব্যানার্জি বলেন, জানুয়ারি মাসের পর থেকে আর চট্টগ্রাম অফিসে ভিড় হচ্ছে না। চট্টগ্রাম ডিভিশনে তিনটা ভিসা কালেকশন সেন্টার করেছি। কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এখন কুমিল্লা, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকেরা আর এখানে আসে না। তাই খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের ভিসা প্রসেস হয়ে যায়।
২০১৬ সালে চট্টগ্রাম ভিসা সেন্টার থেকে এক লাখ ৪০ হাজার ভিসা দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে তা বেড়ে হয় এক লাখ ৬০ হাজারে। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা হয় এক লাখ ৮৯ হাজার এবং চলতি বছর এ সংখ্যা বেড়ে দুই লাখ থেকে দুই লাখ ১০ হাজার পর্যন্ত হতে পারে বলে জানান সহকারী হাই কমিশনার।
মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, বিএফইউজে’র সাবেক সহসভাপতি শহীদ উল আলম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির চেয়ারম্যান স্বপন মল্লিক, প্রথম আলোর যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ওমর কায়সার, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যুরো প্রধান সমীর কান্তি বড়ুয়া।
এসময় চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি মনজুর কাদের মনজু, অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, গ্রন্থাগার সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী, কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম, স ম ইব্রাহীম, মোহাম্মদ আলী, কাজী আবুল মনসুরসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জয়নিউজ/আরডি/বিআর