পুরো ক্যারিয়ারজুড়ে যে কাজটা নিখুঁতভাবে করেছেন, সেটাই শেষ আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে এসে করলেন আরো নিখুঁতভাবে। তার ইয়র্কারে পরাস্ত হয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম যেভাবে ভূপাতিত হলেন, সেটাই হয়ে রইল এ ম্যাচের প্রতীকী চিত্র। মালিঙ্গার শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশকে হারিয়েছে ৯১ রানে।
বাংলাদেশের জয় পেতে দরকার ছিল ৩১৫ রান। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানরা নিয়েছিল ৩১৪ রান।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হয়।
শ্রীলঙ্কার ৩১৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মালিঙ্গা-নুয়ান প্রদীপের পেস তোপে দিক হারায় টাইগার টপঅর্ডার। দলীয় ৩৯ রানেই ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে চোখ রাঙাছিল বড় হার। ওয়ানডে অধিনায়কত্বের অভিষেকে শূন্য রানে মালিঙ্গার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তামিম। মিঠুন (১০) প্রদীপের বলে ফেরেন এলবিডব্লিউ হয়ে। সৌম্যকেও (১৫) দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করেন মালিঙ্গা। লাহিরু কুমারাকে আপারকাট করতে গিয়ে আউট হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৩)।
এরপর ১১১ রানের জুটি গড়ে দলকে আশার আলো দেখাচ্ছিলেন সাব্বির-মুশফিক। কিন্তু দলীয় দেড়শ রানে সাব্বির (৬০) ফিরে গেলে বড় হারের শংকা জাগে। এরপর আর কেউ বলার মত রান করতে পারেননি। দলীয় ১৯৯ রানে মুশফিকও (৬৭) ফিরে যান। ১৪ বলে ১৮ রান করে মালিঙ্গার শেষ শিকারে পরিণত হন মুস্তাফিজ। ৪১ ওভার ৪ বলে সব উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ২২৩ রান।
শ্রীলঙ্কার হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন মালিঙ্গা ও নুয়ান প্রদীপ। সেঞ্চুরি করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন কুশল পেরেরা।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে। দলীয় ১০ রানের মাথায় অভিষেক ফার্নান্ডোকে (৭) ফিরিয়ে দেন শফিউল। এরপর মিরাজের বলে করুনারত্নে (৩৬) ফিরলে ভাঙে ৯৭ রানের জুটি।
এরপর জুটি গড়েন দুই কুশল। সৌম্যের বলে ১১১ রান করে ফেরেন কুশল পেরেরা। শ্রীলঙ্কার রান তখন ৩২.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৭। কুশল মেন্ডিসকে (৪৩) ফেরান রুবেল হোসেন। আম্পায়ার আউট না দিলেও তিনি নিজে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল আলতো করে ছুঁয়ে গিয়েছিল তার ব্যাট। ৩৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান তখন ৪ উইকেটে ২১২।
এরপর ৬০ রানের জুটি গড়েন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও লাহিরু থিরিমান্নে। মুস্তাফিজের বলে ২৫ রান করে আউট হন থিরিমান্নে। শ্রীলঙ্কার রান তখন ৪৪.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ২৭২। ক্রিজে এসে ৩ বলে ২ রান করে আউট হন থিসারা পেরেরা। ব্যক্তিগত ৪৮ রানে আউট হন ম্যাথিউস। ১৮ রান করে ফেরেন ধনাঞ্জয়া। ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা মালিঙ্গা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ৩১৪/৯ (ফার্নান্দো ৭, করুনারত্নে ৩৬, কুশল পেরেরা ১১১, কুশল মেন্ডিস ৪৩, ম্যাথিউস ৪৮, থিরিমান্নে ২৫, থিসারা পেরেরা ২, ধনাঞ্জয়া ১৮, মালিঙ্গা ৬*, প্রদীপ ০*; শফিউল ৯-০-৬২-৩, মিরাজ ৯-০-৫৬-১, রুবেল ৯-০-৫৪-১, মোসাদ্দেক ৭-০-৪৫-০, মুস্তাফিজ ১০-০-৭৫-২, সৌম্য ৫-০-১৭-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪-০)।
বাংলাদেশ: ৪১.৪ ওভারে ২২৩ (তামিম ০, সৌম্য ১৫, মিঠুন ১০, মুশফিক ৬৭, মাহমুদউল্লাহ ৩, সাব্বির ৬০, মোসাদ্দেক ১২, মিরাজ ২, শফিউল ২, রুবেল ৬*, মুস্তাফিজ ১৮; মালিঙ্গা ৯.৪-২-৩৮-৩, প্রদীপ ৯-১-৫১-৩, থিসারা ৬-০-৩৬-০, কুমারা ৭-০-৪৫-১, ধনাঞ্জয়া ১০-০-৪৯-২)।