সামনেই চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। ওয়ার্ড পর্যায়ের এই সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে এসেছে চাঞ্চল্য। তবে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নতুন করে গ্রুপিং মাথাচড়া দেওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন অনেকে। তাদের মতে, নগরের ৪৩টি ওয়ার্ড ও সবক’টি থানায় রয়েছে চরম গ্রুপিং।
নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সিটি মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আমলে গঠিত তৃণমূল কমিটিগুলোতে তাঁর অনুসারীদের আধিক্য ছিল বেশি। তাঁর মৃত্যুর পর তৃণমূল নেতাকর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।
অপরদিকে নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী রয়েছে নগরের প্রায় ওয়ার্ডে। সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত কমিটিতে পদ-পদবী পেতে উভয় গ্রুপ থেকে নেতাদের উপর চাপ রয়েছে। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নগরের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছে। আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে এই সম্মেলন শেষ হবে ২১ অক্টোবর। অক্টোবরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই নগরের সকল ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন শেষ করার জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা আছে।
সম্মেলন বিষয়ে গত ২২ জুলাই নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়। সভার শুরুতেই সাংগঠনিক নির্দেশনামূলক বক্তব্যে নগর সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, গ্রুপ বিবেচনা না করে সকলের মতামত সাপেক্ষে ওয়ার্ড পর্যায়ে নতুন নেতৃত্ব গঠিত হবে। যারাই দলের দুর্দিনে নিবেদিত ছিলেন এবং কোনোভাবেই অর্থ-বিত্তের জন্য দল করেননি, তাদেরকে নেতৃত্বে আনা হবে। এক্ষেত্রে যদি কেউ অবাঞ্ছিত ঘটনার সৃষ্টি করেন, তাকে দল থেকে ছুটি দেওয়া হবে। নির্ধারিত তারিখগুলোর মধ্যেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যদি এটা না হয় তা হলে বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে কেন্দ্রকে অবহিত করা হবে।
নাছির বলেন, দলের মধ্যে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব ও ভিন্নমত থাকতে পারে। তবে এ নিয়ে বাড়াবাড়ি চলবে না।
তিনি জানান, দলের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে ন্যূনতম ১৫০ জন করে সদস্য অন্তর্ভুক্তকরণের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী তালিকা অবশ্যই মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তরে পেশ করতে হবে। যাতে এর ব্যত্যয় না ঘটে তা ১০টি তদারকি কমিটিকে মনিটরিং করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন বলেন, সাংগঠনিক নির্দেশনা অনুযায়ী তৃণমূল স্তরের নেতৃত্ব গঠনই আওয়ামী লীগের শক্তিকে সুসংহত করবে। এই নেতৃত্বই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের জয়যাত্রাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবে।
বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সম্মেলন শুরু হবে ২ সেপ্টেম্বর ১নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের মাধ্যমে। এরপর ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী প্রতিটি ওয়ার্ড সম্মেলন হবে। ওয়ার্ডভিত্তিক সম্মেলনের তারিখ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ মহানগর ও থানা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে ওয়ার্ড সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংঘাত ও সহিংস ঘটনার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক জয়নিউজকে বলেন, তৃণমূলে দক্ষ ও পরিশ্রমী কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে। কোনো গ্রুপের কর্মীকে নয়। যারা সংগঠনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ তাদেরকে নিয়ে ২৬ জনের কমিটি হবে।
তিনটি ইউনিট কমিটি সম্পূর্ণ করে ওয়ার্ড কমিটি করা হবে।
জয়নিউজ/আরসি