খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা চলছে। এতে ব্যাপক ভূমিধসের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। তারা বলছে, অতীতে পাহাড়ধসে জেলার রামগড় ও অন্যান্য স্থানে বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তারপরও থামছে না পাহাড় কাটা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রামগড়ের শ্মশানটিলা, খাগড়াবিল, নজিরটিলা, বল্টুরাম, তৈচালা, জালিয়াপাড়া, কালাডেবা প্রভৃতি এলাকাতে ব্যাপকভাবে পাহাড় নিধন হচ্ছে। একটি মহল পাহাড় কেটে ট্রাক ও ট্রাক্টর বোঝাই করে মাটি সরিয়ে নিচ্ছে। ইটখোলা, রাস্তা ও পুকুর ভরাটসহ নানা কাজে এ মাটি ব্যবহার করা হয়। ফলে পাহাড়ধসে জানমালের ক্ষতির আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। স্থানীয় মো. এনামুল হক, রতন দে ও নয়ন ত্রিপুরাসহ আরও অনেকে বলেন, এই মাটি পাচারকারীদের ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো সময় পাহাড়ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে, পাতাছড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে টিলা ও পাহাড় কেটে সাবাড় করার খবর পাওয়া গেছে। পাতাছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আলমগীর বলেন, এখানে বড় ধরনের ভূমিধসের আশঙ্কা করছি। এভাবে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় নির্বিচারে পাহাড় কাটা হলেও দেখার কেই নেই। এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি মো. আবু দাউদ বলেছেন, স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু অসাধু ব্যক্তির ছত্রছায়ায় বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে। পরিবেশবিধ্বংসী এই বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধে তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরও কঠোর হতে বলেছেন।
তবে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পাহাড় কাটা পরিবেশ আইনে গুরুতর অপরাধ। প্রশাসনের অগোচরে দুষ্ট লোকেরা অনেক সময় পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে যায়। এই অশুভ তৎপরতা বন্ধে প্রশাসন কঠোর আছে।
তিনি জানান, পাহাড় বা টিলা কাটার খবর পেলেই প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়। সম্প্রতি পাহাড় কাটার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জেলার দীঘিনালা, গুইমারা ও রামগড়ে দোষিদের জেল-জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি কোথাও পাহাড় কাটার খবর পেলে প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও হেডম্যান-কারবারিদের সজাগ থাকতে হবে বলে মনে করে এলাকার সচেতন মহল।
জয়নিউজ/শ্যামল/আরসি