সুশান্ত নামে জন্মেছিলেন এখনকার তিস্তা দাস। কিন্তু একসময় বুঝতে পারেন জন্মসূত্রে পাওয়া পুরুষ শরীরটি তাঁর নয়। অবশেষে ১৫ বছর আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়ে নারী হয়ে যান সুশান্ত।
কলকাতার আগরপাড়ার বাসিন্দা তিস্তার বয়স এখন চল্লিশের কাছাকাছি। ইতোমধ্যেই তিস্তা নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন একজন কবি ও সমাজকর্মী হিসেবে।
অন্যদিকে আসামে লামডিংয়ের দীপান্বিতা জন্মেছিলেন নারী হয়ে। তবে তাঁর শরীরে ছিল পুরুষের উপসর্গ। দিপান্বিতাও বছর তিনেক আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুরুষ হয়ে যান। নাম বদলে রাখেন দীপন চক্রবর্তী। তাঁর বয়সও এখন চল্লিশের কোঠায়।
তিস্তা ও দীপন আলাদা রাজ্যে বেড়ে উঠলেও তাঁদের জীবনের গল্পটা ছিল প্রায়ই একই রকম। আর এই মিলই তাঁদের এক করল সাতপাঁকে। সোমবার (৫ আগস্ট) বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন তিস্তা ও দীপন।
তিন বছর আগে লিঙ্গান্তরসংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতার আগরপাড়ায় এসেছিলেন দীপন। তিস্তা দাস এই লিঙ্গান্তরসংক্রান্ত সংস্থাটি চালান। সেখানেই তিস্তার সঙ্গে পরিচয় হয় দীপনের। দুজনেই লিঙ্গান্তরিত নারী-পুরুষ। প্রথম দেখাতেই দীপনের ভালো লেগে যায় অবশেষে তিস্তার এক বান্ধবীর মাধ্যমে মনের কথাটি আগে বলেন দীপন। তিস্তাও সায় দেন। সেই থেকে প্রণয় আর এখন পরিণতির দিকে যাচ্ছে এ সম্পর্ক।
বিয়ে হয়েছে কলকাতাতেই। একেবারে ছাঁদনাতলায় হিন্দুশাস্ত্রমতে। ৭ আগস্ট হবে বউভাতের অনুষ্ঠান। দীপন থাকছেন এখন কলকাতার গড়িয়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে। বর্তমানে কলকাতার একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করেন দীপন।
এই বিয়ে নিয়ে তিস্তা বলেন, ‘দীপনকে দেখে ভেবেছি, ভালোবাসা দুটি মনের ব্যাপার।’
দীপন বলেন, ‘আমার কাছে পৌরুষ মানে জেদাজেদি নয়, একটা মেয়েকে বোঝা, তাই এত দিন অপেক্ষা করেছি।’
২০১৪ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রূপান্তরকামীদের মৌলিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। যদিও পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হলো রূপান্তরকামী এক জুটির।
জয়নিউজ/পিডি