জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পর ভারত সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই প্রতিবাদ শুরু করেছে কাশ্মীরীরা। বুধবার (৭ আগস্ট) বিক্ষোভরতদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় ভারতীয় বাহিনী। এতে ৬ জন নিহত ও অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪ শতাধিক রাজনীতিক ও স্বাধীনতাপন্থি নেতাদের।
৩৭০ ধারা বাতিল করে পাকিস্তানকে কার্যত ৪৪০ ভোল্টের শক দিয়েছে ভারত। আগামীদিনে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর ও বেলুচিস্তান দখলের কথাও শোনা যাচ্ছে অনেকের মুখে। ফলে আক্রোশে ফুঁসছে পাকিস্তান।
সরাসরি লড়াইয়ে না গেলেও অন্য ষড়যন্ত্র করছে পাকিস্তানি সেনারা। মুম্বাইসহ ভারতের একাধিক শহরে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইয়বাকে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছে পাক সেনা ও আইএসআই। ইতোমধ্যে হামলার আশঙ্কায় সতর্কবার্তা জারি করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
গোয়েন্দারা জানিয়েছে, আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণরত লস্কর জঙ্গিদের একটি দলকে ভারতে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে প্রথমে জঙ্গিদের পাক অধিকৃত কাশ্মীরের লিপা ভ্যালিতে থাকা লঞ্চপ্যাডে আনা হবে। তারপর সুযোগ বুঝে জেহাদিদের কাশ্মীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। তবে এবার কাশ্মীর ছাড়াও লক্ষ্য মুম্বাইসহ ভারতের একাধিক বড় শহর।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করার পর ট্রেনে বা সড়কপথে মুম্বাইয়ে প্রবেশ করার ছক রয়েছে জঙ্গিদের। এই গোটা অপারেশনের দায়িত্বে রয়েছে মুম্বাই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদের ভাই তালহা। এছাড়াও, ইসলামিক স্টেটের বেশ ধরে ‘সমুন্দরি জেহাদ’ বা সমুদ্রপথেও মুম্বাই বা গুজরাট উপকূল দিয়ে ভারতে ঢোকার ছক রয়েছে জঙ্গিদের। তবে প্রস্তুত ভারতীয় সেনাবাহিনীও।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গোলা বর্ষণ করে চলেছে পাক রেঞ্জার্সরা। পালটা জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনারাও। কাশ্মীর উপত্যকায় রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। কোস্টগার্ড, নৌসেনা থেকে শুরু করে উপকূলবর্তী পুলিশ স্টেশনগুলিকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত কয়েক মাসে বহুগুণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে এই জঙ্গি সংগঠনগুলি। জলদস্যুদের কায়দায় যাতে তারা সমুদ্রপথে ভারতে হামলা চালাতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে গোষ্ঠীর নির্বাচিত জঙ্গিদের। ব্যবস্থা করা হয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্রের। তাদের টার্গেটে রয়েছে বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে শুরু করে তেলবোঝাই ট্যাঙ্কার।
এক গোয়েন্দা শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, রিপোর্টে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেখানে বলা হয়েছে, জলপথে হামলা চালাতে পটু করে তুলতে ওই জঙ্গিদের কঠোর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে লস্কর ও জইশ। নৌসেনার কায়দায় সমুদ্রে ডুবসাঁতার শেখানো হচ্ছে এবং শ্বাসরোধ করে অনেকক্ষণ জলের নিচে থাকার কৌশল রপ্ত করানো হচ্ছে।
জয়নিউজ/আরসি