গ্যাস সরবরাহ না থাকায় ২৩ দিন ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পেপার মিলস (কেপিএম) লিমিটেডের।
বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে প্রধানমন্ত্রী যে বই তুলে দেন, সে বইয়ের কাগজ এই কেপিএমে উৎপাদিত হয়। দীর্ঘদিন এভাবে মিল বন্ধ থাকায় বছরের প্রথমদিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পারবে কি-না তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে মিল কর্তৃপক্ষ। কবে নাগাদ গ্যাস সরবরাহ করা হবে তাও সঠিকভাবে বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় কেপিএমে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে মিল পুনরায় সচল করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শ্রমিক নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট কেপিএমে গ্যাস লাইনের মিটারিং পার্টস বিকল হয়ে পড়ায় মিলের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে মিলের কাগজ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় মিলে স্থায়ী, অস্থায়ী, কোম্পানি মাস্টার রুল ও পে-অফসহ ৮৫০ জন শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তা অলস সময় কাটাচ্ছেন। মিল বন্ধ থাকায় দৈনিক ৩০-৩৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
উৎপাদন বন্ধ থাকায় মন্ত্রণালয়, এনসিটিবি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৩ হাজার টন কাগজ সরবরাহের অর্ডার রয়েছে তা হাত ছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড.এমএমএ কাদের জয়নিউজকে বলেন, কেপিএমের গ্যাস লাইনের মিটারের পার্টস নষ্ট হওয়ায় মিলে গ্যাস সরবারহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মিলের উৎপাদনও বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, কিন্তু কবে নাগাদ গ্যাস সরবরাহ করা হবে তা সঠিক কিছু জানাতে পারেনি তারা।
তিনি আরও বলেন, মিলের উৎপাদন বন্ধ থাকায় চাহিদা অনুযায়ী কাগজ সরবরাহে আমাদের বেশ বেগ পেতে হবে।
এদিকে কেজিডিসিএল পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহম্মদ মজুমদার জয়নিউজকে বলেন, কেপিএমে অবস্থিত গ্যাস লাইনের মিটারিং পার্টসটি দীর্ঘদিনের পুরানো। পার্টসটি নষ্ট হওয়ার কারণে গ্যাসসংযোগ বন্ধ করা হয়েছে। এটি মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে। মেরামত সম্ভব না হলে পার্টসটি বিদেশ থেকে আনতে হবে। ততদিন গ্যাস সরবারহ করা সম্ভব হবে না বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে কেপিএম শ্রমিক কর্মচারী পরিষদ সিবিএর সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় মিলের উৎপাদন যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনি আবসিক এলাকায় পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় শ্রমিক কর্মচারীরা সীমাহীন কষ্টে দিন যাপন করছে।
এ অবস্থায় কেপিএমে পুনরায় গ্যাসসংযোগ চালু করে মিলকে সচল করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই শ্রমিক নেতারা।
উল্লেখ্য, ২ জুলাই বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের কারণে কেপিএমে ৮ দিন কাগজ উৎপাদন বন্ধ ছিল।