চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পরিবহন সংকটকে পুঁজি করে ব্যাবসা করতে আসে বাইসাইকেল শেয়ারিং সেবা ‘জোবাইক’। মোবাইল অ্যাপভিত্তিক সেবা দিত সংস্থাটি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে সাইকেল মেরামতের অজুহাতে সার্ভিস বন্ধ রেখেছে তারা। এতে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
জোবাইকে রেজিস্ট্রেশন করেছিল চবির অন্তত ৯ হাজার শিক্ষার্থী। সংস্থাটির পেমেন্ট সিস্টেম প্রিপেইড হওয়ায় এসব শিক্ষার্থীর টাকা রয়ে যায় তাদের অ্যাপে। যা সংস্থাটির উত্তোলনের সুযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুজন বলেন, আমার একাউন্টে ৫০ টাকা ছিল। এভাবে অনেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তারা। অথচ তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও সার্ভিস দিচ্ছে না জোবাইক।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও জোবাইক সূত্রে জানা যায়, জোবাইক চবিতে যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর। এর আগে একই বছর কক্সবাজার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রম শুরু করে সংস্থাটি। গত ১২ মে থেকে বর্ষাকালীন অবকাশ, পবিত্র রমজান, শবে কদর ও ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বন্ধ হয় ক্যাম্পাস। একইসঙ্গে বন্ধ হয় জোবাইকের চাকাও। কিন্তু ছুটি শেষে ৩৫ দিন পর গত ১৬ জুন চবি খুললেও জোবাইকের আর দেখা মেলেনি ক্যাম্পাসে। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও তাদের অজুহাত, সাইকেল মেরামত করছে তারা!
জানা যায়, কার্যক্রমের শুরুতে ক্যাম্পাসে ৮০টি সাইকেল দিয়েছিল সংস্থাটি। পরে সেটিকে কমিয়ে ৫০টিতে আনে তারা।
কার্যালয় দখলের চেষ্টার অভিযোগ
এদিকে কার্যক্রম বন্ধের পর ক্যাম্পাসে জোবাইকের কার্যালয়টি কেউ কেউ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে দরজা ভেঙে কার্যালয়ের ভিতরে দুর্বৃত্তরা নিজেদের মালপত্র রেখে গেছে। দুর্বৃত্তরা ওখানে দোকান দিতে চাচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা কী বলছেন?
কবে আসবে জোবাইক- জয়নিউজের এমন প্রশ্নে নিশ্চিত কোনো উত্তর দিতে পারেননি জোবাইকের চবি লীড মাইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা শিগগির ক্যাম্পাসে জোবাইক আনতে চাচ্ছি। আগস্টেই নিয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু কিছু টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে সম্ভব হয়নি। অক্টোবরের দিকে হয়ত নিয়ে আসতে পারব।
তিনি আরো বলেন, আমরা তো নিয়ে আসতে চাচ্ছি। কিন্তু অফিস নিয়ে যে হাঙ্গামা হচ্ছে তাতে কার্যক্রম চালাতে পারব কি-না তা নিয়ে আমরা সন্ধিহান। কে বা কারা এমনটা করেছে বুঝছি না।
এ বিষয়ে চবি প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, জোবাইকের ক্যাম্পাসে যারা আছে তাদেরকে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি। যদি তারা সক্ষম হয় তাহলে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালাবে। আর না পারলে বিষয়টা ঝুলিয়ে রেখে তো লাভ নেই। যদি না আসে তাহলে টাকার বিষয়টা সমাধান করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কিছু চুরি হয়েছে কিনা। কিন্তু তারা বলে, কিছু চুরি হয়নি। কে বা কারা কিছু মালপত্র রেখে গেছে। বিষয়টা আমরা খতিয়ে দেখব।