৫৯ শেষ করে ৬০ পা দিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক আজাদী। চট্টগ্রামের পত্রিকা হলেও কিন্তু বিশ্বময় তার পাঠক। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের চমৎকার মেলবন্ধনের সমন্বয় এই পত্রিকা। যার জন্মদিন আজ (৫ সেপ্টেম্বর)। ১৯৬০ সালের এ দিনে আত্মপ্রকাশ ঘটে আজাদী’র।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে কোন পত্রিকা প্রকাশিত না হলেও দৈনিক আজাদী প্রকাশিত হয়। সেদিন পত্রিকার শিরোনাম ছিল ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’।
আজাদী ছাপা হতো আন্দরকিল্লার ঐতিহ্যবাহী কোহিনূর প্রেস থেকে। বাংলাদেশের ছাপাখানার ইতিহাসে কোহিনূর প্রেস একটি মাইলফলক। আজাদীতে হাতেখড়ি হওয়া এমন অসংখ্য সাংবাদিক আছেন যারা মাতাচ্ছেন দেশের সব নামি মিডিয়া হাউজ। অনেকেই আছেন কর্ণধারের পর্যায়েও।
আরও পড়ুন: ইয়ে আজাদী আচ্ছা হ্যায়
আজাদী তার অনলাইন সংস্করণে জানায়, ৫৯ বছর আগের পারিপার্শ্বিক অবস্থায় সংবাদপত্র প্রকাশের ব্যাপারটি ছিল দুরূহ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ একটি জনপদ হলেও চট্টগ্রাম ছিল অবহেলিত একটি শহর। নানাভাবে পিছিয়ে থাকা সেই সময়ের চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের কথা বলার জন্য দৈনিক আজাদী যাত্রা শুরু হয়েছিল। আজাদী প্রকাশের উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রামের মানুষের সমস্যা, সম্ভাবনার কথা তুলে ধরা। প্রকাশনার শুরু থেকে আজাদী দায়িত্বশীলতার সাথে সেই আদর্শ ধরে রেখেছে। আজাদী চট্টগ্রামের কথা বলেছে। এখানকার মানুষের সমস্যা ও সংকটের কথা বলেছে। বলেছে স্বপ্ন ও সম্ভাবনার কথাও। অনেক বাধা–বিপত্তি অতিক্রম করে পত্রিকাটি ক্রমে চট্টগ্রামের মানুষের মুখপাত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনায় ভূমিকা রেখেছে। আজাদী ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
সংবাদপত্র জগতের প্রাণপুরুষ মরহুম ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের হাত ধরেই শুরু দৈনিক আজাদীর। তাঁর জন্ম রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে। ১৯৩২ সালে তার প্রতিষ্ঠিত কোহিনূর ইলেকট্রিক প্রেস, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কোহিনূর লাইব্রেরি এবং ১৯৫০ সালের ২২ ডিসেম্বর তার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক কোহিনূর পত্রিকার আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর তিনি প্রকাশ করেন দৈনিক আজাদী। আজাদী পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষের সুখ-দুঃখ তুলে ধরতে পালন করেছেন অগ্রণী ভূমিকা।
১৯৬২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুর পর দৈনিক আজাদী সম্পাদনা করেছিলেন সাবেক গণপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রামের সংবাদপত্র জগতের পথিকৃৎ, প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ। বর্তমানে দৈনিক আজাদীর সম্পাদক মরহুমের পুত্র এম এ মালেক ও পরিচালনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন এম ওয়াহেদ মালেক। তারা দৈনিক আজাদীকে চট্টগ্রামের জনপ্রিয় একটি দৈনিকে রূপান্তর করতে সক্ষম হয়েছেন।