নগরের শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা তেমন একটা নেই এ কথা মোটাদাগে বলাই যায়। শিশুপার্ক যেগুলো আছে সেগুলোতে ছোটদের চেয়ে বড়দের আনাগোনাই বেশি।
গুটিকতেক লোকজন পুরো পরিবার নিয়ে শিশুপার্কে গেলেও তাদের বিব্রতই হতে হয়। কারণ পার্কগুলোর চারদিকে অশ্লীলতার মেলা। ছোট হোক বড় হোক দেশের প্রতিটা শহরের শিশুপার্কেরই এমন অবস্থা। প্রতিটি শিশুপার্ক দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় করে সাজানো হলেও বর্তমানে পার্কে গিয়ে চোখ মেলে দেখার পরিবর্তে চোখ বুঁজে বসে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।
প্রেমলীলার এক নিরাপদ আশ্রয় যেন কাজির দেউরি শিশুপার্ক।
নগরীর কাজির দেউরি শিশুপার্ক ঘুরে দেখা যায়, এখানে ঘুরতে আসাদের মধ্যে নেই কোন শিশু কিংবা শিশুকে সাথে নিয়ে আসা কোনো পরিবার। আছে শুধু স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে আসা অপ্রাপ্তবয়স্ক কিছু যুবক-যুবতী আর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া কিছু নারী-পুরুষ। তারা এখানে এসে শিশুদের মতো কিংবা চিত্ত-বিনোদন উপযোগী আচরণ করছে না, প্রকাশ্যে জড়িয়ে পড়ছে অনৈতিক সম্পর্কে।
ফিরোজ সিকদার নামে এক অভিভাবক জয়নিউজকে বলেন, এখানকার পরিবেশ এমন যে, শিশুদের নিয়ে থাকা যায় না। এমন কিছু আপত্তিকর দৃশ্য দেখা যায়, যা এই পার্কের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান থাকবে পার্কের সুনাম ধরে রাখার জন্য এখানকার পরিবেশ সুন্দর করার জন্য।
যদিও এর আগে একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর পার্কের সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বেশ কতেক যুবক-যুবতীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করার পর তাদের সতর্ক করে ছেড়ে দিয়েছিল প্রশাসন। এ তালিকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, প্রবাসীর স্ত্রী, অপ্রাপ্ত বয়স্ক যুবক-যুবতীও ছিলো।
স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে আসে অপ্রাপ্তবয়স্করা।
কাজির দেউরি শিশু পার্কের জিএম নাছির উদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের প্রবেশের অনুমতি নেই। এখানে যৌন চাহিদা মেটানোর মত কোনো সুযোগ নেই। আমাদের সিকিউরিটিব্যবস্থা রয়েছে। কিছুক্ষন পর পর তারা গিয়ে দেখছে। তিনি আর বলেন, পার্কে আসার জন্য আমরা কাউকে অনুরোধ করি না। যার আসার সে আসবে। এ ব্যাপারে তিনি আর বেশি কথা বলেতে রাজি হননি।
তবে অনেকের অভিযোগ, মালিক কর্তৃপক্ষ সম্ভবত কাজির দেউরি শিশু পার্ক নামটি ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তরুণ-তরুণীদের প্রেমলীলার এক নিরাপদ আশ্রয় বানিয়েছেন পার্কটিকে। কেউ কেউ সেটির নাম দিয়েছে শিশু তৈরির পার্ক হিসেবে। সারা দিনের চেয়ে সন্ধ্যার পরে পার্কের পরিবেশ আরো ভয়ানক আকার ধারণ করে বলে জানিয়েছেন কয়েক ভুক্তভোগী পরিবার।