আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চাইলেন সদ্য পদত্যাগ করা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে গোলাম রাব্বানী তার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া এক পোস্টে এ ক্ষমা চান। সেইসঙ্গে দলে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে না পারায় নেতাকর্মীদের কাছেও ক্ষমা চান ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগ করা এ নেতা।
জয়নিউজের পাঠকের জন্য তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
`মমতাময়ী নেত্রী, আপনার মনে কষ্ট দিয়েছি, আমি অনুতপ্ত, ক্ষমাপ্রার্থী। প্রিয় অগ্রজ ও অনুজ, আপনাদের প্রত্যাশা-প্রাপ্তির পুরো মেলবন্ধন ঘটাতে পারিনি বলে আপনাদের কাছেও ক্ষমাপ্রার্থী।
মানুষ মাত্রই ভুল হয়। আমিও ভুলত্রুটির উর্ধ্বে নই। তবে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, স্বেচ্ছায়-স্বজ্ঞানে আবেগ-ভালোবাসার এই প্রাণের সংগঠনের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী ‘গর্হিত কোন অপরাধ’ করিনি। আনীত অভিযোগের কতটা ষড়যন্ত্রমূলক আর অতিরঞ্জিত, সময় ঠিক বলে দেবে।
প্রাণপ্রিয় আপা, আপনি আদর্শিক পিতা বঙ্গবন্ধু মুজিবের সুযোগ্য তনায়া, ১৮ কোটি মানুষের আশার বাতিঘর। আপনার দিগন্ত বিস্তৃত স্নেহের আঁচল, এক কোণে যেন ঠাঁই পাই। আপনার ক্ষমা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বাকিটা জীবন চলতে চাই।’
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
কমিটি গঠনের বছর পার না হতেই তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের ওপর রীতিমতো বিরক্ত হয়ে পড়েন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় নেতাদের ফোন রিসিভ না করা, কর্মসূচিতে দেরি করে যাওয়া, প্রধান অতিথিদের বসিয়ে রাখার মতো অভিযোগ ওঠে শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে।
অভিযোগের সেখানেই শেষ নেই। ছাত্রলীগের জেলা পর্যায়ের সম্মেলন করতে না পারা, রাতজাগা ও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা, বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগও ছিল তাদের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তাদের প্রত্যাশিত মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও তোলেন নেতা-কর্মীরা।
সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে চাঁদা দাবি নিয়ে বড় ধরনের সমালোচনার মুখে পড়েন শোভন-রাব্বানী। একপর্যায়ে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত পৌঁছে। সব দেখে-শুনে প্রধানমন্ত্রী শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।
জয়নিউজ/পিডি