কাচালং নদীর অববাহিকায় গড়ে উঠা সীমান্তবর্তী জনপদ বাঘাইছড়ি। রাঙামাটির জেলা থেকে এই জনপদের দূরত্ব ১৬৪ কিলোমিটার। দুর্গম এই জনপদে ১৯৭৫ থেকে আলো ছড়াচ্ছে বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়। সবুজ অরণ্যের এই বিদ্যানিকেতনের বহু শিক্ষার্থী সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত। কাজ করছে দেশ ও সমাজে কল্যাণে।
স্কুলজীবন শিক্ষার্থীদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। স্কুলের ফেলে আসা সময়, নানা রঙের স্মৃতিমাখা গল্পগাথা আজো অম্লান। ব্যস্ত জীবনে সুযোগ পেলেই সবাই ফিরে যেতে চাই সেসব সোনালি দিনে। পুরনো সেই দিনের স্মৃতি জাগানিয়াদের গল্প শুনতে ও শোনাতে বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা প্রাণের সম্মিলনে মিলিত হয়।
‘বাঁধন এখানো প্রাণে প্রাণে’ স্লোগানে ৪ অক্টোবর (শুক্রবার) পুনর্মিলনীর আয়োজন করে বিদ্যালয়ের ২০০১ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে রুইলুই পাহাড়ের চূড়ায় লুসাই ক্লাবে আয়োজিত পুনর্মিলনীতে দিনভর ছিল নানা আয়োজন। প্রায় দেড়যুগ পর পুরনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত সহপাঠীরা। স্কুলবেলার পুরনো খুনসুটি, স্মৃতিমাখা গল্প, স্মৃতিচারণ, গানসহ নানা আয়োজন মুগ্ধ করেছে অংশগ্রহণকারীদের। স্কুলের চেনা বন্ধুদের দীর্ঘ সময় পর কাছে পেয়ে অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে।
২০০১ ব্যাচের রিপন, জেনন, সবুজলিটন, দীপান্তর, তপন, সবিনয়, রিটেন, নান্টু, জিকো, পিপলি, ললনা, লাকী, পহেল, অমর কৃষ্ণ, ন্যান্সিসহ শিক্ষার্থীরা স্বপরিবারে পুনর্মিলনীতে অংশ নেয়। মঙ্গল প্রদীপ জালিয়ে শুরু হয় পুনর্মিলনীর মূল আয়োজন।
এমন উৎসবমুখর দিনেও স্কুলের বন্ধুরা ভুলেনি হারানো বন্ধুকে। স্কুলের বন্ধু শান্তিকা চাকমার (ব্যাচ ২০০১) মৃত্যুতে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
পুনর্মিলনীর অন্যতম উদ্যোক্তা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভােগের (সওজ) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, প্রথমবারের মতো স্কুলের বন্ধুরা সবুজ পাহাড়ের চূড়ায় মিলিত হই। প্রকৃতির এই অসামান্য বিশালতায় পুরনো দিনের স্মৃতিকাতর হতেই এই পুনর্মিলনীর আয়োজন। ব্যস্ত জীবনে কিছুটা হলেও অকৃত্রিম প্রশান্তি দিয়েছে এই পুনর্মিলনী।
এতে স্কুলের বন্ধুদের মধ্যে বন্ধন আরো দৃঢ় হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আগামীতে বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বড় পরিসরে স্কুল প্রাঙ্গণে পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হবে।
জয়নিউজ/সবুজ/আরএইচ