‘মেয়ে হত্যার বিচার চাওয়ায় আমাকে ১৪ লাখ টাকার অফার দিয়েছে। এই টাকা দিয়ে আমি কি করব! টাকা তো আর আমাকে মা বলে ডাকবে না। আমি সারারাত থানায় বসে থাকার পরও পুলিশ আমার অভিযোগ আমলে নেয়নি।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন পলির মা ছকিনা খাতুন। তিনি বলেন, পুলিশ বারবার বলছে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি আমার মেয়েকে চাই। কেউ কি তাকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
নগরের বন্দর এলাকায় স্কুল শিক্ষার্থী রেবেকা সুলতানা পলিকে ধর্ষণের পর হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
রোববার (৬ অক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানবন্ধন করা হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন ফাইট ফর উম্যান রাইটসের সভানেত্রী ও সাবেক কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রেহানা বেগম রানু, সুচিন্তা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক জিন্নাত সোহানা চৌধুরী, এমইএস কলেজের প্রভাষক অধ্যাপক ববি বড়ুয়া, নগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগর সভাপতি রায়হান উদ্দিন, নগর ছাত্রলীগের সদস্য মো. পাভেল, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগের নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা জাহেদা আমিন চৌধুরী, মানবধিকার কর্মী আরিফুর রহমান, পলির ক্লাসমেট তামান্না ইসলাম ও নিহত পলির বড় ভাই রাসেল রানা।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, পলিকে পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। যা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। পলির ময়নাতদন্ত কিংবা সুষ্ঠু বিচার নিয়ে কোনো কারসাজি হলে ছাত্র-ছাত্রীরা রাজপথে নামারও হুঁশিয়ারি দেয়।
টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নিতে দেওয়া পুলিশের প্রস্তাবকে দুর্ভাগ্যজনক বলে বক্তারা আরও বলেন, ১৪ লাখ টাকায় রফাদফা করার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা অনৈতিক। পুলিশ রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরও কিভাবে এমন প্রস্তব দেয়, তা কারও বোধগম্য নয়। তাই এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজ রাজপথে নামবে।
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের ছাত্র নেতা হারুনুর রশিদ হৃদয়ের সভাপতিত্বে ও ছাত্র নেতা সালাউদ্দিন এবং নুরুল আফসার রাফির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কলেজের ছাত্র নেতা কাজী নাঈম, আনোয়ার পলাশ প্রমুখ।
মানববন্ধনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীরাসহ সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।