ঘড়িতে তখন সময় ৯টা বেজে ৩০ মিনিট। কাপড় ধুতে বসতঘরের পাশে হালদার কুশিবর ঘাটে গিয়েছিল কুলছুমা। এ সময় নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ব্লকে মিললো ১২ কেজি ওজনের মা-মাছ (কাতাল)।
এরপর কুলছুমা নদী থেকে মাছটি উদ্ধার করে নিয়ে যান তার ঘরে। উদ্দেশ্য পরিবার-পরিজন নিয়ে কাতাল মাছের স্বাদ নেওয়া। হালদা নদীর সেই কাতালের স্বাদ নিতে পারল না কুলছুমা। পরে জেল-জরিমানার ভয়ে মাছটি গ্রাম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। কুলছুমা এলাকার কুশিবর বাপের বাড়ির বাদশা মিয়ার স্ত্রী।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে হাটহাজারীর গড়দুয়ারা ইউনিয়নের কামদর আলীহাট প্রকাশ কান্তজ্জ্যার হাট এলাকার হালদার তীরবর্তী কুশিবর ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইডিএফ হালদা প্রকল্পের কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমিন জয়নিউজকে বলেন, সকালে কুশিবর ঘাট এলাকায় হালদার ভাঙন রোধে তীর সংরক্ষণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যবহৃত ব্লকে আটকে থাকা একটি কাতাল মা-মাছ কুলছুমা নামে জনৈক এক মহিলা উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে যায়।
এ সময় আমার কাছে খবর আসে ওই মহিলা জেল-জরিমানার ভয়ে মাছটি গ্রাম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে গ্রাম পুলিশ মাছটি আমার অফিসে নিয়ে আসে। পরর্বতীতে মাছটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে সংরক্ষণের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক হালদা গবেষক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া মুঠোফোনে জানান, শুক্রবার হালদা নদী থেকে একটি মৃত কাতাল মাছ উদ্ধার করে এক মহিলা। কার্পজাতীয় (কাতাল) ওই মা-মাছটির ওজন হবে প্রায় ১২ কেজি ও দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই ফুট। মাছটির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
তিনি আরও জানান, ধারণা করছি হালদার ভাঙন রোধে তীর সংরক্ষণ বেড়িবাঁধ নির্মাণে ব্যবহ্নত ব্লকে (পাথর) আটকে মাছটির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজে ব্যবহৃত যান্ত্রিক যানের পাখার আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ভয়ে মাছটি হয়তো ব্লকে আত্মরক্ষার্থে অবস্থান নিয়েছিল। পরর্বতীতে জোয়ারের পানি কমে যাওয়ায় মাছটি ব্লকে আটকা পড়েছিল।
এদিকে কুলছুমার স্বামী বাদশা মিয়া জয়নিউজকে বলেন, তাঁর স্ত্রী কুলছুমা মাছটি রান্না করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়নি। হালদা আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাছাড়া আমি নিজে হালদার উপর নির্ভরশীল একজন ডিমসংগ্রহকারী।