ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ছাত্রলীগ অপকর্মের সীমা ছাড়িয়েছে তবে শিবিরের সীমাকে ছাড়াতে পারেনি।
আজকে ছাত্রলীগের হাতে বুয়েটসহ প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় জিম্মি। এরা শুধু রাতের নিশিথে আবরারকে পিটিয়ে মারেনি, এরপর তারা খেলা দেখেছে, খেয়েছে।কী অমানবিক। ওদের পাপের ভার পূর্ণ হয়েছে। শিবিরকে হালাল করার চেষ্টা হচ্ছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে নগরের জেএমসেন হল প্রাঙ্গণে দলের চট্টগ্রাম জেলার ১২তম সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেনন বলেন, খুনীদের বিচরণ করতে দেবেন আবার তাদের পক্ষে কথা বলবেন তা কী করে হয়। ভিন্নমতের জন্য পিটিয়ে হত্যা যেমন গণতন্ত্রের জন্য ভয়ংকর একইভাবে মৌলবাদীরা যখন একই কাজ করে সেটা শুধু গণতন্ত্রের জন্য নয় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য আরো ভয়ংকর।
তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সুযোগ নেবে মৌলবাদী শক্তি। আবরার হত্যার প্রতিবাদ চলবে কিন্তু এর সুযোগে শিবির যেন হালাল না হয়। পাশাপাশি সমাজে বিদ্যমান অসাম্য ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ করতে দুর্নীতি ও মিথ্যা আশ্রিত রাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দেশের কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে সকলকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে পানিচুক্তি নিয়ে বিএনপি-জামাত ও সিপিবির সমালোচনা করে মেনন বলেন, আমি বিএনপি-জামাতের কথা বুঝি, সিপিবির কথা বুঝি না। তারা নিজেদের বাম-প্রগতিশীল বলেন। তারা চুক্তির বিরুদ্ধে মশাল মিছিল করে বলেছেন চুক্তি বাতিল করতে হবে। কি চুক্তি হয়েছে? ফেনী নদীর এক গণ্ডুস পানির জন্য তারা হাহাকার করছেন।
সভায় রাশেদ খান মেনন বলেন, সরকার দাবি করছে দেশে উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বাড়ছে, পোশাকখাতে রপ্তানি বাড়ছে, মাছ উৎপাদনে আমরা চতুর্থ। প্রধানমন্ত্রী একের পর এক বিদেশি তকমা পাচ্ছেন। আমরা খুশি।কিন্তু এ উন্নয়ন কে করেছে? আমার সেই কৃষকের ফসলের মূল্য তো দেন নাই। পাটকল শ্রমিকরা মজুরি পায় না।
দুই শতাংশ মানুষের হাতে দেশের সব ব্যবসা, ব্যাংক-বীমা, টিভি এমনকি স্যাটেলাইট এর মালিকানাও তাদের লাগে। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
এর আগে জেএমসেন হল প্রাঙ্গণে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রাশেদ খান মেনন। পরে এক শোভাযাত্রা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এতে কৃষক, পাটকল শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, গার্মেন্টস শ্রমিক, ছাত্র মৈত্রী ও যুব মৈত্রী এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্যরা অংশ নেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মাননা জানানো হয় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, শিল্পী আলোকময় তলাপাত্র এবং আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসানকে।
ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি আবু হানিফের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় উদ্বোধন পরবর্তী অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমিন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, যুব মৈত্রীর সভাপতি কায়সার আলম, ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক এস এম আলাউদ্দিন।