চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হলে চাকরি হারাবেন প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। কেননা গতানুগতিক কাজগুলো করবে মেশিন বা রোবট। তাই এমন পরিস্থিতি মোকাবেলা প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত? এমন প্রশ্নকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে ক্যারিয়ার ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান ‘ডি ইঞ্জিনিয়ার্স ক্লাব’ ও বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট ঢাকা।
শনিবার (১২ অক্টোবর) এটুআই এর সহযোগিতায় নগরের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে এ গোল টেবিল বৈঠক সম্পন্ন হয়।
বৈঠকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হলে সম্ভাব্য কি কি পরিবর্তন আসতে পারে? চাকরি ক্ষেত্রে কতটুকু পরিবর্তন আসবে তা নিয়ে প্রেজেন্টেশন করেন বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট ঢাকা’র উপদেষ্টা কেএম হাছান রিপন। এ প্রেজেন্টেশনে উঠে আসে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হলে প্রায় ৫৫ লাখ মানুষ চাকরি হারাবে।
কেননা গতানুগতিক কাজগুলো সহজেই নিঁখুতভাবে করে নিবে মেশিনগুলো। তাই মানুষকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। নিজস্বক্ষেত্রে ইমোশনাল কমিউনিকেশন ও জটিল কাজগুলোতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষা পদ্ধতিতে শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী যুগোপযোগী পড়াশোনা নিশ্চিত করতে। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষা পদ্ধতি আরও জনপ্রিয় করে তোলার প্রস্তাব আছে বৈঠকে।
ডিইসি ইঞ্জিনিয়ারস্ ক্লাবের প্রতিষ্ঠা সভাপতি সোমেন কানুনগোর সঞ্চালনায় বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক, করপোরেট প্রফেশনাল, উদ্যোক্তা, চাকরিজীবী ও শতাধিক গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করে।
বৈঠকে অতিথি ছিলেন বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে’র উপাচার্য ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারি, সরকারের এটুআই এর ফিউচার অব ওয়ার্কের প্রধান আসাদ উদ্ জামান, র্যাংকস্ এফসি প্রোপাটিজের সিইও তানবির শাহরিয়ার রিমন, বিএসআরএম গ্রুপের নেটওয়ার্ক ও ডাটাবেইজ ইনফ্রা’র ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম মাহিন, পেসিফিক জিনসের হেড অব প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট লুথমিলা ফরিদ, চট্টগ্রাম ইউম্যান চেম্বারের পরিচালক সাহেলা আবেদিন ও সুলতানা নুরজাহান রুজি।
গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেন, আমরা যে পদ্ধতিতে পড়াশোনা করছি, তা অনেকটা প্র্যাকটিক্যাল না। যেমন মার্কেটিং নিয়ে পড়ছি আমি যেখানে ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে কিছু জানা যাচ্ছে না। অথচ বাস্তবতায় মার্কেটিং দখল করছে ডিজিটাল মার্কেটিং। এক্ষেত্রে আমরা কিভাবে প্রস্তুত হতে পারি?
এমন প্রশ্নের জবাবে অনুষ্ঠানের আলোচক তানবির শাহরিয়ার রিমন বলেন, গতানুগতিক কাজ দখল করে নিবে মেশিন। কিন্তু এসব মেশিন তৈরি করছে মানুষেরা। হয়ত ভবিষ্যতে মেশিনও রোবটরা তৈরি করবে৷ এক্ষেত্রে লিডিংটা সবসময় মানুষ দিবে। তাই শিক্ষাকে চাহিদা অনুযায়ী হতে। কোনোভাবে দক্ষতা অর্জন হয় না এমন শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া যাবে না। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুগোপযোগী ও ভবিষ্যৎ লিড করবে এমন বিষয়গুলোকে পাঠের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান এই আলোচক।
এ সময় বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে’র উপাচার্য ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারি বলেন, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে যে পরিবর্তন হবে তা মোকাবেলা করা যাবে না। তাই আমাদের ক্ষেত্র অনুযায়ী দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে। এজন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায় থেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে৷ ভবিষ্যত পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের অবগত করতে হবে।
প্রোগ্রামটির পার্টনার হিসেবে ছিলেন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ইয়ং বাংলা, অ্যাপ্রোচ পি আর গ্লোবাল লিমিটেড, পেনিনসুলা চট্টগ্রাম, লিড বাংলাদেশ, নেসলে বাংলাদেশ ও ফাইভ এস পিআর।