টেকনাফে ড্রাগন চাষে বাড়ছে জনপ্রিয়তা। উচ্চমূল্য, রোগবালাই কম এবং সহজে চাষযোগ্য হওয়ায় নতুন হলেও চাষিরা দিন দিন এ চাষের দিকে ঝুঁকছে।
টেকনাফের মাটি এবং পরিবেশ ড্রাগন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী বলে জানা গেছে। অনুকূল পরিবেশ এবং চাষ সহজ হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকেরাও নতুন এই ফলের চাষ করার কথা ভাবছেন।
উপজেলার হোয়াইক্যং রইক্ষ্যং এলাকার কৃষক আবুল শামা এবং হ্নীলার রঙ্গিখালী এলাকার রশিদ মিয়া জয়নিউজকে বলেন, ড্রাগন ফল নাকি ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার রোগের জন্য বেশ উপকারী। ফলের দামও বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরি সহযোগিয় কৃষক বাহাদুর এবং দুদু মিয়ার মত অনেকে ড্রাগনের চাষ করার পরিকল্পনা করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রাগন ফল পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ এবং ক্যালসিয়াম আছে। এটি ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার রোগের জন্যও উপকারী ফল। মূল্য বেশি হলেও নতুন এই ফলের কদর দিন দিন বাড়ছে।
কৃষকরা জানায়, শীতকাল ছাড়া সারাবছরই ড্রাগন ফলন দেয়। তবে বর্ষাকালে ড্রাগন ফল বেশি ধরে। ড্রাগন ফল সহজে বংশ বিস্তার করে। সেচ এবং তেমন সারও প্রয়োগ করতে হয়না। নিয়মিত পরিচর্যা করলে চারা রোপণের একবছরের মাথায় ফলন পাওয়া যায়। সবদিক বিবেচনায় কৃষকরা উচ্চমূল্য পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ড্রাগনের চাষ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বর্তমানে টেকনাফে ১২টি ড্রাগনের বাগান আছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ড্রাগন চাষে কারিগরী সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে ৫০টিরও বেশি বসতভিটায় বিচ্ছিন্নভাবে ড্রাগনের চাষ করা হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, এখনো টেকনাফে কৃষকসহ অনেকে আছেন, ড্রাগন কী, কীভাবে চাষ করে, সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
জেনে রাখা ভাল ড্রাগন চাষের জন্য অতিরিক্ত জমিও লাগে না। অন্যান্য ফসলের মতো তেমন পরিচর্যাও করতে হয় না। বাড়ির সামনে বা পিছনে ছোট্ট জায়গায় সহজে ড্রাগন চাষ করা যায়। দীর্ঘমেয়াদি লাভবান হওয়া যায়। ড্রাগন গাছ সহজে মরে না। নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে ৪০ বছর পর্যন্ত এই গাছ থেকে ফলন পাওয়া যায়। সচেতন কৃষকরা উপজেলা জুড়ে ড্রাগন চাষের বিস্তার ঘটাতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের কথা জানান।
উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাঘোনা এলাকার সফল কৃষক বাবু কিং তঞ্চঙ্গা জয়নিউজকে বলেন, ২০১৬ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ২০ শতক জমিতে আমি ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। পরের বছর থেকেই ১৬০টি গাছে ফলন দিতে শুরু করে। প্রতি মৌসুমে তিনি সহজে ৩০/৪০ হাজার টাকা আয় করেন বলে জানান।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শফিউল আলম জয়নিউজকে বলেন, এটি একটি উচ্চমূল্য ফসল। টেকনাফে ড্রাগনের চাহিদা খুব বেশি। রোগব্যাধি কম, ফলের চাহিদা বেশি হওয়ায় কৃষকরাও চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।