সড়ক নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার পর সড়কে আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা এখন চোখে পড়ার মতো। আইন অমান্য করলেই পেতে হচ্ছে শাস্তি-জরিমানা। আর এতেই নগরে বেড়ে গেছে মোটরসাইকেলের হেলমেট বিক্রি। যারা আগে হেলমেট ব্যবহার করতেন না তারাও ছুটছেন03 হেলমেট কিনতে। তাই যারা মোটরসাইকেল সরঞ্জাম বিক্রি করেন তাদের এখন সুসময় বলা চলে।
কিন্তু দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে নয়, কেবল আইন মানতেই এ হেলমেট পড়া। ফলে বিক্রি বাড়লেও মানসম্মত হেলমেট না কিনে দামে সস্তা হেলমেট বেশি কিনছেন ক্রেতারা। বাজারে চাহিদা থাকায় ক্রেতারাও বিক্রি করছেন এসব নিম্নমানের হেলমেট।
বিক্রেতাদের দেওয়া তথ্য মতে, এমআইকেবি, আইকেবি ও এসটিএম চীনের তৈরি হেলমেট ৭০০ টাকা দামে বিক্রি হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি একই নামে হেলমেট পাওয়া বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া স্টার, এসটিএম কোম্পানির বাংলাদেশি হেলমেট বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৪০ থেকে ২০০ টাকা।
অথচ ভারত ও চীনের সিলভারবাট, স্টুডেন্ট, জাহাজ, ফিউশন ও কেএম নামের মানসম্মত হেলমেট ২৪০০ থেকে ৩২০০ টাকায় পাওয়া গেলেও কদাচিৎ ক্রেতারা তা কিনছেন। তাই বাজারে বিক্রেতারাও বেশি পরিমাণে নিম্নমানের এসব হেলমেট রাখছেন দোকানে।
কদমতলীর মোটরসাইকেল পার্টস বিক্রেতা তৈয়ব এন্ড ব্রাদার্সের সত্বাধিকারী মোহাম্মদ আবু তৈয়ব জয়নিউজকে বলেন, গত ছয় মাস ধরে মোটরসাইকেলের হেলমেট বিক্রি বেড়েছে। চলতি মাসে প্রথম থেকেই তা আরো বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে মানসম্মত হেলমেট ক্রেতারা কিনতে চান না। মূলত ৮০ শতাংশ হেলমেট বি্ক্রি হয় মোটামুটি মানের, যে গুলোর দাম ৩০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। অবশিষ্ট ২০ শতাংশ বিক্রি হয় ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা দামের। আসলে এসব হেলমেট নয় একধরনের প্লাস্টিকের টুপি।
এব্যাপারে সড়কে দায়িত্বরত এক ট্রাফিক সাজেন্ট সুজন জয়নিউজকে বলেন, আগে বাইকার ও আরোহীদের হেলমেট পড়া অভ্যস্ত করতেই আপাতত তেমন কড়াকড়ি করছেন না ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ। আগামীতে এ ব্যপারে আরো কঠোর হবে পুলিশ।
তিনি আরো বলেন, আমরা মামলা দিয়ে রাজস্ব বাড়িয়ে বাহবা নিতে চাইনা, মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে চায়। সবার আগে প্রতিটি মানুষকে নিজের নিরাপওার কথা মাথায় রাখতে হবে। তাহলে আমাদের কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
জানা যায়, হেলমেটের মান নিয়ে আমাদের দেশে কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ভারতে এর ঠিক উল্টো চিত্র। ভারতের পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস) হেলমেটের মান নির্ধারণ করে কঠোরভাবে। ভারতীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ও নিম্নমানের হেলমেট উৎপাদন ও বিক্রি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে। যদি কেউ করে তাহলে এ অপরাধে যে কাউকে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার করা যাবে।
বিশ্ব স্ব্যস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তথ্য মতে, আগামী ২০২০ সালে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার থেকে ২ লাখ ১৪ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
কিন্তু মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার করলে ৬৯ হাজার থেকে ৯০ হাজার বাইকার বেঁচে যেতে পারে। এতে করে দেশগুলোর সাশ্রয় হবে ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ১০০ কোটি মাকিন ডলার।
জয়নিউজ/পিডি