‘হয়ত আর বেশি দিন নেই…, কেউ কেউ আমার দু’ একটা ছবি কালেক্ট করে নিয়ে পোস্ট দিবে, কেউ বলবে ভাইটা আমাদের মাঝে আর বেঁচে নেই, কেউ বলবে ক্লাশের শান্তশিষ্ট মেধাবী সেরা ছাত্রটা আজ আমাদের স্বার্থপরতা করে চলে গেল, কেউ বলবে জীবনের চাইতে কি মায়াটা বেশি হয়ে গিয়েছিল? কেউ বলবে আত্মহত্যা মহাপাপ, কেন করলি এই কাজ? আর কেউ বলবে একূল, ওই কূল দুই কূলী হারালি. . .
আবেগঘন এ পোস্টটি কুড়ি পার হয়ে একুশে পা দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মো. এমদাদ উল্লাহ ওরফে হাসান সিকদারের। গত ২০ ডিসেম্বর দুপুর ৩টা ৪ মিনিটে এবিসি ফ্যামেলি নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে তিনি পোস্টটি শেয়ার করেন। ওই পোস্টটি শেয়ার করার তিনদিন পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে হাটহাজারী থানা পুলিশ এমদাদের বাড়ি “মায়ের আচঁল”নামে একটি ভবন থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে। এমদাদ লেখাপড়ার পাশাপাশি বেসরকারি বিমানসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স লিমিটেডের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ঢাকার এশিয়ান ইউনির্ভাসিটি অফ বাংলাদেশ (এইউবি) নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সভ্যতা বিষয়ে বিএ (সম্মান) শ্রেণিতে পড়তেন এমদাদ। তিনি হাটহাজারীর মিরের খিল এলাকার আবদুল মালেক সিকদার বাড়ির মৃত মো. রফিক সিকদারের ছোট ছেলে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) নিজ কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে হাটহাজারীর গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন এমদাদ। তবে ওই দিন (রোববার) তিনি বড় বোন লাকি আক্তারের বাসায় থাকেন। পরদিন সোমবার বোনের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। তবে মঙ্গলবার তাঁর বোন বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একপর্যায়ে চিন্তিত বোন ভাইয়ের বাড়িতে চলে আসেন। সেখানে দেখেন ঘরের দরজা ভেতর থেকে আটকানো। এতে সন্দেহ হলে স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি ঘরের দরজা ভাঙেন। পরে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় এমদাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাসুদ আলম জয়নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। তবে আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি।
জয়নিউজ/তালেব/পিডি