ওয়াসার দাবি, ত্রুটিপূর্ণ মিটারের কারণে তারা প্রতিনিয়ত বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আবার গ্রাহকদের অভিযোগ, যে পরিমাণ বিল দিচ্ছেন সেই পরিমাণ পানি তারা ওয়াসা থেকে পাচ্ছেন না।
ওয়াসা আর গ্রাহকের মধ্যে এ দূরত্ব দূর করতে আসছে নতুন একটি পাইলট প্রকল্প। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ মনে করছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বন্ধ হবে নানা আর্থিক অনিয়ম, বাড়বে রাজস্ব। আবার গ্রাহকরাও পাবেন নিরবচ্ছিন্ন সেবা।
ওয়াসার রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আপাতত এই প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে নগরের ৪নং ওয়ার্ডের চাঁন্দগাও আবাসিক এলাকা। এ এলাকার সব মিটার পরিবর্তন করে লাগানো হবে বিশ্বের অত্যাধুনিক মিটার।
এ মিটারে কোনো কাটা থাকবে না, যে কাটা পরিবর্তন করে মিটার পরিদর্শকরা নিজেদের ভাগ্যবদলে করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার মিটারে ছাকনি নেই যে ময়লায় আটকে মিটার বন্ধ হয়ে গ্রাহকের বারোটা বাজলেও বিল দিতে হবে।
সাড়ে ছয় হাজার টাকা থেকে সাত হাজার টাকায় স্থাপন করা হবে প্রতিটি মিটার। মিটারের উপর মডিউল থাকবে। লগার মেশিনের সাহায্যে ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূর থেকে যাওয়ার সময় প্রতিটি মিটারের রিডিং স্বয়ংক্রিয়ভাবেই লগার মেশিনে চলে আসবে।
পরীক্ষামূলক ২ হাজার ২০০ জন গ্রাহককে এই মিটারের সুবিধা দেওয়া হবে। ২ কোটি ২০ লাখ টাকায় পাইলট প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে।
যোগাযোগ করা হলে ওয়াসার রাজস্ব কর্মকর্তা-২ এরফান সাজ্জাদ জয়নিউজকে বলেন, বোর্ডের অনুমোদন পেলে মিটারগুলো ফ্রান্স অথবা জার্মানি থেকে আনা হবে। আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যেই মিটারগুলো স্থাপন করা হবে। চান্দগাঁও এলাকায় কোনো মিটার পরিদর্শক থাকবে না। লগারের মাধ্যমে মডিউল মেশিনে মিটারের রিডিং কালেক্ট করা হবে।
তিনি আরো বলেন, মিটারগুলো স্থাপন সম্পন্ন হলে মিটারের কারসাজির অভিযোগ যেমন থাকবে না, তেমনি কমে আসবে নন র্যাভেনিউ ওয়াটারের (এনআরডব্লিউ) পরিমাণ। ফলে রাজস্বের পরিমাণ অনেক বাড়বে।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ জয়নিউজকে বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওয়াসা অটোমেশনের যুগে প্রবেশ করছে। এটি এরই অংশ মাত্র। চান্দগাঁও ওয়ার্ডে বিশ্বের উন্নতমানের মিটার স্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে নগরের সব মিটার পরিবতন করা হবে। যত পানি তত পয়সা, এতে সম্মানীত গ্রাহক এবং ওয়াসা দু’পক্ষই লাভবান হবে।
নতুন পাইলট প্রকল্পের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয় ওয়াসার প্রধান কার্যলয়ে অভিযোগ দিতে আসা পশ্চিম রামপুরা এলাকার বাসিন্দা এনায়েতুর রহিমের কাছে। তিনি জয়নিউজকে বলেন, অটোমেশন করুক আর যাই করুক, আমরা চাই নিরবচ্ছিন্ন পানি। কথা একটাই, যত পানি দেন, ঠিক তত বিল যেন নেন।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম ওয়াসার ৭০ হাজার ৬৩২ জন গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে ৮৯ দশমিক ০৩ শতাংশ আবাসিক এবং ১০ দশমিক ৫৭ শতাংশ অনাবাসিক গ্রাহক।
জয়নিউজ