২০১৯ সালে নানা ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যে আলোচনায় ছিল অগ্নিকাণ্ড। বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নগর ও নগরের বাইরে ৬২১টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কখনো চলন্ত গাড়িতে অটোরিকশায় আগুন, আবার কখনোবা সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন। আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিয়েছে মার্কেট-ফুটপাত-সড়ক থেকে শুরু করে বস্তির মানুষের প্রাণ।
বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের শুরু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৯ জন। তবে পুরো বছরের ১১ মাসে নগরে ২৫৭ এবং নগরের বাইরে ৩৬৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ২১ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা।
এসব অগ্নিকাণ্ডে কেউ হারিয়েছেন প্রাণ, আবার কেউ হারিয়েছেন নগদ টাকাসহ সম্পদ। কেউ কেউ জানমালের ক্ষতিসহ চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, বছরের ১১ মাসে নগরের ভেতরে ২৫৭ এবং বাইরে ৩৬৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মোট ৬২১টি অগ্নিকাণ্ডে ২১ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এতে প্রায় ৭৮ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। এ দিন গভীর রাতে চাক্তাই এলাকার ভেড়া মার্কেটের বস্তিতে আগুনে ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে নারী-শিশুসহ ৯ জন নিহত হয়। এসময় প্রায় ২০০ ঘর পুড়ে যায়। এরপর ডবলমুরিং থানার মোল্লাপাড়ায় নিরিবিলি আবাসিক এলাকায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের আগুন থেকে ৫ বছরের এক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় আগুনে দগ্ধ হয় তার মা-বাবা ও বোন।
এছাড়া অক্সিজেন রেলগেট এলাকায় দুটি কলোনিতে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের আগুনে ৮১টি বসতঘর পুড়ে যায়।
চান্দগাঁও থানার খাজা রোডের বলিরহাট এলাকায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ভ্রাম্যমাণ মেলায় অগ্নিকাণ্ডে ১৩টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোতোয়ালির জহুর হকার্স মার্কেটে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় শতাধিক দোকান। এই আগুনে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কাপড়ের গোডাউন পুড়ে যায়। ৪ ঘণ্টার আগুনে প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এছাড়া আগ্রাবাদে প্যাসিফিক গ্রুপের নির্মাণাধীন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। চকবাজার এলাকার কেয়ারির সামনে রাস্তায় চলন্ত অবস্থায় অটোরিকশায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এছাড়া নগরের ভেতর-বাইরে ছোট-বড় অসংখ্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিনের দৃষ্টি আকষর্ণ করা হয়। তিনি জয়নিউজকে বলেন, প্রত্যেকের বাসা, দোকান এবং অফিসে অগ্নিপ্রতিরোধের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাতে অগ্নিকাণ্ডের সময় ২০-৩০ মিনিট প্রতিরোধ করা যায়।
তিনি বলেন, চলতি বছরে বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সব ভবনে এটি করতে গেলে জনভীতি তৈরি হবে, তাই ভবন মালিকদের নোটিশ দিয়ে সাবধান করা হয়েছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস নিয়মিত ভবনগুলোর ফলোআপ করছে। এর মাঝে কোথাও কোনো ঘাটতি থাকলে সেগুলো সংস্কার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ভবন নির্মাণ আইন মানলে এবং সচেতন হলে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা কমে আসবে বলে মন্তব্য করেন।
জয়নিউজ/এসআই