বান্দরবানের থানচি উপজেলার বড়মদক ইউনিয়নে উদ্বোধনের আগেই প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২০% অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়ার পরও শিশুদের জন্য তৈরি করা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
মূলত, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ভবনটি নির্মাণের ফলে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার আগেই ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, পিডিবি-৩ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অর্থায়নে জেলার থানচি, নাইক্ষ্যংছড়ি, রোয়াংছড়ি, রুমা’সহ বিভিন্ন উপজেলায় দুই তলা বিশিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের টেন্ডার আহবান করা হয়। এরমধ্যে রেমাক্রী ইউনিয়নের বড়মদক এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি কক্সবাজারের মেসার্স নূর আল-এর সত্ত্বাধীকারী নূরুল আলম, রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুইসুই থুই রনি এবং শৈক্যচিং তিন জন মিলে নির্মাণ করেন। দুর্গমতার কারণে বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ২০% অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। তারপরও ২০১৬-১৭ সালে শুরু হওয়া ভবনের নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়সীমা চলতি বছরের জুন মাসে বুঝিয়ে দিতে পারেনি ঠিকাদার। উল্টো ভবনের বিভিন্ন স্থানে দেয়ালে ফাটল দেখা গেছে। একইসাথে ভবনের নিচতলার ফ্লোরও ডেবে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো ধরনের নিয়ম-নীতি অনুসরণ না করে স্থানীয় সাঙ্গু নদীর বালি এবং স্থানীয়ভাবে লাকড়ি দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা ইট দিয়ে দায়সারাভাবে বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। দুর্গমতার কারণে এলজিইডি’র কর্মকর্তারা স্বার্বক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজের তদারকি করতে না পারায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
নির্মাণ কাজের ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতা মুইসুই থুই রনি বলেন, নির্মাণ কাজে সাঙ্গু নদীর বালি এবং পাহাড়ে স্থানীয়ভাবে আগুনে পুড়িয়ে তৈরী করা ইট ব্যবহার করা হয়েছে কথাটি সত্যি। তবে সেটির পরিমাণ বেশি নয়। মূলত উন্নতমানের ঝংকার বালি এবং ইটের ভাটার ইট ব্যবহার করেই বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণ করেছি। ভরানো মাটিতে ফ্লোর করায় এবং সাঙ্গু নদীর বালির কারণে কয়েকটি স্থানে ফাটল এবং ফ্লোর ডেবে গেছে। সেগুলো আমরা ঠিক করে দেবো। এই কাজে প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২০% অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়ার পরও আমাদের লোকসান হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) থানচি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসেন জানান, বড়মদক বিদ্যালয় ভবনের দেয়ালে এবং ফ্লোরে ফাটল দেখা দেয়ার খবর আমরা পেয়েছি। কাজটি এখনো আমরা ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেইনি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বলেছি কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করার পর আমরা বুঝে নিবো।
জয়নিউজ/জেডএইচ