জুরাছড়িতে তামাক চাষ করে কর্জের বোঝা বাড়ানো কয়েকজন চাষি এবার সফল হয়েছেন। না, তামাক চাষ করে নয়। তারা সফল হয়েছেন তরমুজ চাষে। এখন এ চাষিরা প্রতিটি তরমুজ বিক্রি করছেন ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়!
এদিকে চাষিদের এমন সফলতায় মৌসুমের আগেই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে তরমুজ। যদিও দামটা একটু বেশি। তবে সুস্বাদু হওয়ায় বাড়তি দাম নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই ক্রেতাদের।
জুরাছড়ি ইউনিয়নের সামিরা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কিছু কিছু শাকসবজির ক্ষেত থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেতেই তামাক আর তামাক। এর মধ্যেই কয়েকজন চাষি চাষ করেছেন তরমুজ।
সামিরার পশ্চিম দিকের নদীর পাড়ের আবাদি জমিতে রয়েছে তরমুজের ক্ষেত। চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে তরমুজ। চাষিরা ব্যস্ত তরমুজ তুলতে। সুস্বাদ এই তরমুজ কিনতে রাঙামাটি শহর থেকে ক্ষেতে এসেছেন পাইকারি ক্রেতারা। তরমুজ কিনতে তারা দরদাম করছেন চাষিদের সঙ্গে।
ক্ষেতেই কথা হয় রাঙামাটি শহরের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. সিদ্দিক ও শাওনের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, তরমুজের দাম একটু বেশি। তবে মৌসুমের আগে হওয়ায় বাজারে এর ভালো চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া পাহাড়ি এ তরমুজ ভীষণ মিষ্টি এবং ক্ষেতেও সুস্বাদু।
এদিকে সামিরার অস্থায়ী বাজারে দেখা গেল স্তূপ করে তরমুজ বিক্রি করছেন ছায়া রানী চাকমা। একেকটি তরমুজ তিনি বিক্রি করছেন সাড়ে চারশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকায়।
ছায়া রানী চাকমা জয়নিউজকে বলেন, লাভের আশায় গত দুই-তিন বছর ধরে আমি তামাক চাষ করেছিলাম। কিন্তু লাভতো দূরে থাকুক বছর শেষে উল্টো ৮০-৯০ হাজার টাকার কর্জের বোঝা থেকে গেছে। তাই এ বছর ৬০ শতাংশ জমিতে শাকসবজি এবং ৪০ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেছি।
প্রায় তিন লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি শুধু পাইকারদের কাছেই সাতশ’ তরমুজ বিক্রি করেছি ৪০০ টাকা দরে।
শুধু ছায়া নন, তরমুজ চাষে এখন লাখ টাকা গুণছেন ঐশি দেওয়ান, পত্যারানী, চম্পাসহ আরও কয়েকজন চাষি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশিষ চাকমা জয়নিউজকে বলেন, উপজেলায় ৮৭৬ হেক্টর জমিতে রবি ফসলের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন চাষিরা।
তিনি আরো বলেন, এখানকার জমি উর্বর। কিন্তু জমিগুলোতে তামাক চাষে বিভিন্ন কীটনাশক ও সার ব্যবহারে দিন দিন এ উর্বরতা হারিয়ে যাচ্ছে। এই ক্ষতি থেকে চাষিদের রক্ষা করতে কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন মৌসুম বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে উন্নত বাদাম, ভুট্টা, ফলনশীল ধানসহ শাকসবজির বীজ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান জয়নিউজকে বলেন, সামিরার তরমুজ খুবই সুস্বাদু। সফল তরমুজ চাষিদের উপজেলা পরিষদ থেকে সবরকম সহায়তা দেওয়া হবে।
জয়নিউজ