১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরের লালদিঘি মাঠে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় সেদিন মিছিলে ছিলেন বর্তমান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় জনসভায় গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় ৫ আসামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রায় ঘোষণার পর জয়নিউজকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এম এ সালাম।
তিনি বলেন, এক সময় রায় নিয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এ সরকারের মামলার রায় হয়েছে। ওইদিন আমরাও ওই মিছিলে ছিলাম। হয়তো আমিও সেদিন মারা যেতে পারতাম। ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের পরিবার আজ খুশি হবে।
অবিলম্বে রায় কার্যকরের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা যেন আর না ঘটে এটি একটি সতর্কবার্তা।
১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি নগরের লালদীঘি মাঠে সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ২৪ জন মারা যান। আহত হন দু’শতাধিক মানুষ।
নিহতরা হলেন, মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, স্বপন কুমার বিশ্বাস, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন চৌধুরী, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দ মিয়া, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া, মো. কাসেম, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ ও শাহাদাত।
৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলাটি পুনরায় প্রাণ ফিরে পায়। আদালতের আদেশে মামলাটির তদন্তের ভার পড়ে সিআইডির ওপর।
সিআইডি ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আদালতে। আবারও আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর পুলিশের আট সদস্যকে আসামি করে দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ১৯ জানুয়ারি সাফাই সাক্ষী দেন ৪ আসামি। ১৬৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৩ সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পুলিশের তৎকালীন হাবিলদার প্রদীপ বড়ুয়া, কনস্টেবল মমতাজ উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল্লাহ ও ইন্সপেক্টর গোপাল চন্দ্র (জেসি) মণ্ডল। জেসি মণ্ডল ছাড়া অন্য ৪ আসামী কারাগারে রয়েছে।
এ মামলার অপর ৪ আসামির মধ্যে প্রধান আসামি চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, কনস্টেবল বশির উদ্দিন ও আব্দুস সালাম মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্সপেক্টর গোপাল চন্দ্র (জেসি) মণ্ডল ঘটনার পর থেকে নিরুদ্দেশ। তিনি ছিলেন কোতোয়ালী অঞ্চলের পেট্রোল ইন্সপেক্টর।