স্টাফ রিপোর্টার: নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েল হত্যাকান্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। হানিফ পরিবহনের বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে নির্মমতার শিকার হয়ে মারা যায় সে।
শুক্রবার (২৭ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে পায়েলের মামা কামরুজ্জামান চৌধুরী টিটু বলেন, বাসচালক ও তার সহযোগীরাই পায়েলকে খুন করেছে । বৃষ্টি উপেক্ষা করে সন্দ্বীপ ও হালিশহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
উল্লেখ্য , গত ২১ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে বন্ধুর সঙ্গে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন পায়েল। পুলিশ সূত্র জানায়, পথে রাত ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায় গিয়ে যানজটে পড়ে বাসটি। এসময় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাস থেকে নিচে নামেন পায়েল। এরপর থেকে আর পায়েলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সোমবার (২৩ জুলাই) সকালে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর খাল থেকে পায়েলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পায়েলের মৃত্যু ক্লু খুঁজতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তড়িঘড়ি করে বাসে উঠতে গিয়ে বাসের দরজার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আহত হন পায়েল। আহত পায়েলকে সাহায্য না করে মৃত ভেবে তাকে নদীতে ফেলে দেয় ওই বাসের স্টাফরা। ।
পায়েলের নিকটাত্মীয়দের দাবি, তাকে হত্যার পর মুখ বিকৃত করে নদীতে ফেলে দিয়েছে হানিফ পরিবহনের বাসটির স্টাফরা। পায়েলের মামা কামরুজ্জামান চৌধুরী জয়নিউজবিডিকে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আটক তিন জনের একজন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে পায়েলকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মামুন আমাদের জানিয়েছেন, গ্রেফতারের পর বাসচালকের এক সহকারী স্বীকার করেছে, তারাই পায়েলকে হত্যা করে এবং পরে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। বাসচালক ও সহযোগীরা পুলিশকে জানায়, পায়েল দৌড়ে এসে বাসে উঠতে গিয়ে দরজার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। এসময় নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। চালকের সহযোগী জনি বিষয়টি বাসচালককে জানালে চালক স্টিয়ারিং থেকে নেমে এসে বলে, “ছেলেটা তো মারা গেছে। তাকে এখন হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঝামেলা হবে।” এরপর তারা পায়েলের মুখ থেঁতলে দিয়ে লাশ দ্রুত নদীতে ফেলে দেয়।’
আজকের মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পায়েলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। হানিফ পরিবহনের চালক ও সহযোগীরা মিলে পায়েলকে হত্যা করেছে। তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। পায়েলকে আর ফিরে পাওয়া যাবে না। তার মতো আর কাউকে যাতে এভাবে প্রাণ দিতে না হয়,এটা নিশ্চিত করতে হবে।
সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে পায়েলের বড় মামা কামরুজ্জামান চৌধুরী টিটু, মেজো মামা গোলাম সোহরাওয়ার্দী বিপ্লব, ছোট মামা বাহার চৌধুরী শিপন, সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সারোয়ার সুমন, চট্টগ্রাম চেম্বার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সারওয়ার হাসান জামিল, মানবাধিকারকর্মী আমিনুল হক বাবু, সন্ধীপ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউছুপ রিপন, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুমানা নাসরিন বক্তব্য দেন।