স্বদেশহীন, বাস্তুহারা, মাতৃভূমিচ্যুত শরণার্থীদের কথা কেউ বুঝি ভাবেন না! নিজের দেশে ফিরে যাওয়ার তাদের ভেতর যে আকুতি, তা হয়তো সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের তামাটে রঙের মলিন চেহারাগুলোর দিকে তাকালেই ভেসে ওঠে।
শরণার্থীদের পুনর্বাসন, মৌলিক অধিকার ও তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে (সিআইইউতে) অনুষ্ঠিত হলো ‘সার্টিফিকেট কোর্স অন ইন্টারন্যাশনাল রিফিউজি ল’অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল প্রোটেকশন’ শীর্ষক তিন মাসব্যাপী ট্রেনিং কোর্স।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে নগরের জামাল খানের সিআইইউ ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। সিআইইউর স্কুল অব ল’আইন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এ ট্রেনিং কোর্সের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সনদপত্র তুলে দেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র অ্যাসিসটেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ভেটন ওরানা।
এসময় অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, শরণার্থী মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো সবসময় আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাদের অবস্থানকে সমর্থন জোগানো ও নিজ দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিকভাবে জনমত তৈরির কোনো বিকল্প নেই।
এই ধরণের আয়োজনের মাধ্যমে সিআইইউর আইনবিভাগের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বড় ভূমিকা রাখবে বলে অনুষ্ঠানে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিআইইউর উপাচার্য ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়া যে কারও জন্য ভীষণ কষ্টের। তাই শরণার্থীদের শান্তিপূর্ণ পুনর্বাসনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে স্কুল অব ল’র উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. জাকির হোসাইন বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে জাতিসংঘের ইউএনএইচসিআর। আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষিত করে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে ইতোমধ্যে তারা সবধরণের সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন, বিষয়টি ইতিবাচক।
স্বাগত বক্তব্যে স্কুল অব ল’র সহকারী ডিন মো. আকতারুল আলম চৌধুরী এই ধরণের আয়োজনের মাধ্যমে আইনবিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার সুরক্ষা, পুনর্বাসনসহ নানান বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন স্কুল অব ল’র দুই কৃতী শিক্ষার্থী ইনজয়া ইউনূস ও আতিয়া হক। এই সময় সায়মা চৌধুরী ও আবির মোবারক নামের অপর দুই শিক্ষার্থীও শরণার্থী নিয়ে তাদের ভাবনার কথা তুলে ধরেন।