প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বহদ্দারহাট বারইপাড়া খালের দুই পাড় নান্দনিক হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন কাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সিটি মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী নান্দনিক দিক বিবেচনায় খালের দু’পাশে প্রয়োজনীয় বাড়তি জায়গা অধিগ্রহণ করে ওয়াকওয়ে নির্মাণের নিদের্শনা দিয়েছেন। তার নির্দেশনানুযায়ী খালটির দৈর্ঘ্য হবে আনুমানিক ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার এবং প্রশস্থ ৬৫ ফুট। এ নতুন খালের দু’পাশে প্রতিরোধ দেওয়াল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া এ খালের দু’পাশে থাকবে ২০ ফুট করে সড়ক এবং নির্মাণ করা হবে ৬ফুট করে ওয়াকওয়ে।
তিনি আরও বলেন, এ খালটি হবে নয়নাভিরাম। যা দেশের অন্য কোথাও দেখা যাবে না। এখন বাকলিয়ার মানুষ অবসর সময়ে বিনোদনের জন্য নগরের বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে যাই। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তখন হবে উল্টো।
নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষ ধুলিকণাবিহীন নির্মল বাতাস ও সৌন্দর্য উপভোগের জন্য আসবে এখানেই। এই প্রকল্পটি হবে সেই রকম একটি সৌন্দর্যমন্ডিত প্রকল্প । যা দেশের মানুষ এক নজরে দেখার জন্য শহরতলী এই বাকলিয়াতে ছুঁটে আসবে ।
মেয়র বলেন খাল খননের জন্য যে সকল ভূমির মালিকের ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে তাদের টাকা যথাযথ প্রক্রিয়ায় মৌজা মূল্যের তিনগুণ নির্ধারণ করে পরিশোধ করা হবে। এক্ষেত্রে এক চুল পরিমাণ অনিয়মের কোনো সুযোগ থাকবে না। কোনো ভূমি মালিকের কোনো ভবন যদি প্রকল্পের প্রস্তাবিত এলাইনমেন্টের মধ্যে পড়ে, তবে তাদেরকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিয়মানুসারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
সিটি মেয়র আরোও বলেন, এই প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে পূর্ব-পশ্চিম ষোলশহর, চান্দগাঁও, মোহরা, উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম বাকলিয়া ও চকবাজারে জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির ফলে জনগণের বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সিটি মেয়র অধিগ্রহণকৃত ভূমি মালিকদের উদ্দেশে বলেন আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখুন, আমার নিজের জায়গা হলে যে রকম গুরুত্ব দিতাম, এখন তার চেয়ে অধিক গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি। ভূমি মালিকেরা যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা পায় তার ব্যবস্থা করা হবে। এ প্রকল্পটি এ এলাকার জন্য কত উপকার বয়ে আনবে তা বাস্তবায়িত হওয়ার পর বুঝতে পারবে এলাকাবাসি।
তাই এ কাজে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন সিটি মেয়র।
এ প্রসঙ্গে সিটি মেয়র বলেন, এ নতুন খাল খননের জন্য অধিগ্রহণ যোগ্য জমির পরিমান ২৫.১৬৬২ একর। প্রস্তাবিত খালটি বহদ্দারহাট বারইপাড়া হাইজ্জারপুল থেকে শুরু হবে। এরপর যুক্ত হবে যমুনা স্কয়ার কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন শাহ আমানত সংযোগ সড়কে। ওই সড়কের নুরনগর হাউজিং এবং ওয়াইজেরপাড়া মাজার হয়ে এটি কর্ণফুলী নদীতে পতিত হবে বলিরহাট বলি মসজিদের উত্তর পাশ দিয়ে।
এই নতুন খাল খননের জন্য প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এরমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ১০৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে স্থানীয় কাউন্সিলর হারুন উর রশিদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চসিক প্যানেল মেয়র জোবাইরা নার্গিস খান, কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, মো. ইউনুচ কোম্পানী, মো. ইলিয়াছ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সালেহ, আনোয়ার হোসেন ও মনিরুল হুদা প্রমুখ।
সভা সঞ্চালনা করেন চসিকের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক।