কুখ্যাত শিবির ক্যাডার সরোয়ার ওরফে বাবলার দেওয়া তথ্যমতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন সরোয়ার। রোববার ভোরে নগরের বায়েজিদ থানায় তাকে আনা হলে তার দেওয়া তথ্যমতে অভিযান চালায় পুলিশ।
সরোয়ারকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করতে খোন্দকারপাড়ার কালু মুন্সীর বাড়িতে যায় বাযেজিদ থানা পুলিশ। এসময় আবদুল কাদেরের বাড়ির উত্তর পাশে মাটির নিচে থেকে একটি আমেরিকার তৈরি একে-২২ রাইফেল, ৩০ রাউন্ড গুলি, ২টি এলজি ও ৪টি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মো. নাসিম জয়নিউজকে বলেন, কুখ্যাত শিবির ক্যাডার সরোয়ার ওরফে বাবলাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে তার বাড়িতে আনা হলে অস্ত্র মজুদ থাকার বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশের বিশেষ টিম তার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সরোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে ৭ দিনে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আশাকরি রিমান্ডে আনতে পারলে আরও বিস্তারিত তথ্য পাবো।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার জয়নিউজকে বলেন, শনিবার কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সরোয়ারকে চট্টগ্রাম আনা হয়। সরোয়ার সিএমপির তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাকে নিয়ে আজ (রোববার) সকালে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে গেলে তার বাড়তে বিপুল অস্ত্র পাওয়া যায়। তার এসব অস্ত্র দেখে বিস্মিত পুলিশও। কারণ সাধারণ কোনো অপরাধীর কাছে এতো অত্যাধুনিক অস্ত্র রাখা সম্ভব নয়। আমরা অনুসন্ধান করছি, তার এসব অবৈধ অস্ত্রের উৎস জানার। বিধিমোতাবেক ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। সিনিয়র কর্মকর্তারাও সরোয়ারের মামলাটি গুরুত্ব নিয়ে দেখছে। খুব শীঘ্রই সরোয়ারের সকল অপকর্মের একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে আইনগত পরবর্তী ব্যবস্থা নিবো।
ক্যাডার সরোয়ারের ঘনিষ্ট বন্ধু ও অপরাধ জগতের অপরসঙ্গী নূর নবী ওরফে ম্যাক্সনের ব্যাপারে ওসি বলেন, সরোয়ার-ম্যাক্সন আর অপরাধ দুটোই একসূত্রে গাঁথা। ম্যাক্সন দেশে পলাতক রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তাকেও আটক করতে পুলিশের ইন্টিলিজেন্স শাখার বিভিন্ন টিম কাজ করছে। অচিরেই পুলিশের হাতে ম্যাক্সন ধরা পড়বে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ সরোয়ার ও তার অপর সহকারী ম্যাক্সনকে গ্রেপ্তার করে বায়েজিদ থানা পুলিশ। সরোয়ার ও ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে নগরের বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, ডবলমুরিংসহ বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে।
২০১৭ সালে জামিনে বেরিয়ে ম্যাক্সন ও সরোয়ার কাতারে আত্মগোপনে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। পরে তাদের বিরুদ্ধে পুনরায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। গত বছরের শেষের দিকে কাতারে থাকা অবস্থায় মারামারিতে জড়ান সরোয়ার ও ম্যাক্সন। সেসময় কাতার পুলিশের হাতে দুইজন আটক হন। শনিবার সরোয়ার ওরফে বাবলা দেশে আসলে এয়ারপোর্ট পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।
সরোয়ার নগরের বায়োজিদ বোস্তামী থানার খোন্দকারপাড়ার আবদুল কাদেরের ছেলে।