সাদিয়া আক্তার (১৪)। সে মাদ্রাসা ছুটির পর বাসায় ফিরে পড়ন্ত বিকালে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মেলায় গিয়েছিল ঘুরতে। এ সময় মেলায় সাদিয়া লার্নিং ট্রি স্কুলের ব্যতিক্রমী ‘ফ্যামিলি ফান ডে’দেখে চড়ার লোভ সামলাতে পারেনি। তাই সে বন্ধুদের সঙ্গে মনের সাধ মেটাতে নাগরদোলায় উঠে পড়ে। তবে নাগরদোলায় উঠা যে তাঁর জন্য কাল হবে তা হয়তো সে জানত না।
চলন্ত নাগরদোলার সঙ্গে তাঁর ওড়না পেঁচিয়ে মাটিতে পড়ে মারাত্মভাবে আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের ছৈয়দ আহম্মদ হাট এলাকার আবদুল হামিদ শাহ্ এর বার্ষিক ওরশের মেলায় এ ঘটনাটি ঘটে।
সাদিয়া ওই ইউনিয়নের মোহাম্মদীয়া তৈয়বীয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে ওই এলাকার হাজী বজল সারাংবাড়ির কৃষক মো. ইসহাক প্রকাশ কালুর মেয়ে। সাদিয়া পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ বলে জানান উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের দফাদার ও নিহত সাদিয়ার জেঠা মো. মুছা।
তিনি জয়নিউজকে আরও জানান, আমার ভাইয়ের ছোট মেয়ে সাদিয়া মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরে মেলায় গিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের একি নির্মম পরিহাস, সে মেলায় গিয়ে এভাবে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরবে তা কখনও ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। তার এ অকাল মৃত্যু আমাদের পরিবারের সদস্যরা মেনে নিতে পারছে না। তার এ মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে সাদিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন তার শিক্ষক ও সহপাঠীরা। মেধাবী এই ছাত্রীর এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না তার শিক্ষকেরা। প্রিয় বন্ধবীর মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকাতুর তার সহপাঠীরা। সাদিয়ার মৃত্যুর খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তার আত্মীয়-স্বজনের আহাজারিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এছাড়া তার পিতামাতাও চমেক হাসপাতালের মর্গে কন্যার শোকে বিলাপ করতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে হাটহাজারী মডেল থানার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ময়নাতদন্তের জন্য সাদিয়ার মরদেহ চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহাদাত। তবে এ বিষয়টি এখনও পর্যন্ত হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ আলম জানেন না বলে জানিয়েছেন।