২০১৯ সালে ডিসেম্বরে বাড়ির পাশের পতিত জমিতে ফুলের নার্সারি গড়ে তুলেন খাগড়াছড়ির পান্না চাকমা। আর দশ জন নারীর মতো সংসারের কাজও করতে হতো তাঁকে। পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীল হতে বেছে নেন ফুল চাষকে। আর চার মাসের মধ্যে এতেই ভাগ্য ফিরতে শুরু করেছে এই নারী কৃষি উদ্যোক্তার।
বর্তমানে প্রায় ৬০ প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুলের সমাহার রয়েছে পান্নার ওয়ার্ল্ড লাইফ গার্ডেন নামে এই নার্সারিতে। বর্তমানে বিক্রিও বেশ বেড়েছে। প্রসার বাড়ায় বাগানের পরিচর্যার জন্য নিয়োগ দিযেছেন আরো ৫ জন স্থায়ী শ্রমিক। এছাড়া অনেকে এই নার্সারিতে খণ্ডকালীন শ্রমিক হিসেবেও কাজ করে।
আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যই নার্সারি গড়ে তুলেছিলেন পান্না চাকমা। নিজে তো বটেই অন্যদের জন্যও সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থানের।
এ নার্সারিরর শ্রমিকরা জানান, নার্সারিতে স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। এখানে যে বেতন পায় তা দিয়ে সংসার ও ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরছ চলে। এখানে স্থায়ীভাবে কাজ করার কারণে আমাদের বেকার থাকতে হচ্ছে।
পান্না চাকমা বলেন, নিজে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য এই নার্সরি গড়ে তুলি। সংসারের কাজের পাশাপাশি কিছু একটা করার চেষ্টা থেকে এই নার্সারি গড়ে তোলা। এখানে বেশ কয়েকজন শ্রমিকও কাজ করে। নিজের পাশাপাশি কিছু লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। নার্সারিতে বেচাকেনাও ভালো। অল্প সময়ে সফলতা ভোগ করছি। তবে পাহাড়ের নারীরা সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ ও প্রশিক্ষণ পেলে অনেকেই উদ্যোক্ততা হয়ে উঠবে। নিজেরা সহজে আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে।
খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের আর্থ সামাজিক ও ভৌগলিক কারণে নারীরা অগ্রসর হতে পারছে না। এখানে কোনো ব্যবসা করার জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে চাইলেও নানা জটিলতা পোহাতে হয়। তাই পাহাড়ের নারীরা এখনো অনেক পিছিয়ে।
এব্যাপারে খাগড়াছড়ি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান, নারীদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবে প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর পুজির সংকটে অনেকে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন না। সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পেলে পাহাড়ের নারীরাও উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।
জয়নিউজ/পিডি