করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে একরকম যুদ্ধ ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এরই ধারাবাহিকতায় সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে সিএমএপি উত্তর বিভাগ।
এই বিভাগে রয়েছে বায়েজীদ বোস্তামি থানা, খুলশী থানা, চান্দগাঁও থানা ও পাঁচলাইশ থানা। নগরের এই চারটি থানার অফিসার ফোর্সরা অনেকটা ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছেন নগরবাসীকে সচেতন করতে। কিন্ত সাধারণ জনগণের অসহযোগিতায় এই কাজে অনেকটা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।
বুধবার (৮ এপ্রিল) সকাল থেকে নগরের বায়েজিদ থানার আশপাশের এলাকায় ঘুরে পুলিশ সদস্যদের সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাতে দেখা গেছে।
এর আগে সিএমপির পক্ষ থেকে নগরের পাঁচটি পয়েন্টে প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যার একটি পয়েন্ট হচ্ছে অক্সিজেন মোড়। এই মোড়ে আগত কোনো গাড়ি সুস্পষ্ট কারণ ছাড়া শহর প্রবেশ করতে পারছে না। শুধুমাত্র জরুরি সেবা প্রদান কাজে নিয়োজিত যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ইতেমধ্যে সিএমপির পক্ষ থেকে সন্ধ্যা ৭টার শুধুমাত্র জরুরি ওষুধের ফার্মেসি ছাড়া বাকি দোকানগুলো বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই আদেশ মানছে না বায়েজীদ থানার বটতল, কুলগাঁও, ট্যানারী এলাকার কিছু অসাধু ব্যাবসয়াীরা। এখানকার কেউ কেউ দোকানের শাটার টেনে ভেতর থেকে অবস্থান করছে। বাইরে থেকে কাস্টমাররা আসলে দোকানদাররা ভেতর থেকে চা-সিগারেট সরবরাহ করছে। এমন দৃশ্যে অলিগলি গুলো অনেকটা সরগরম।
বায়েজীদ বোস্তামী থানার ৭১নং বিট ও ক্যান্টনমেন্ট ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন বড়ুয়া শাপলা জয়নিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনা পেয়ে এবং কমিশনার স্যারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পুলিশ সদস্যরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এটি রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং।
‘আমার দায়িত্বপূর্ণ এলাকা বালুচরা, কুলগাঁও, টাইগার রোড, খন্দকিয়া, মাজার রোড, ট্যানারী বটতল ও অক্সিজেনসহ আশপাশের সব এলাকায় ঘুরছি। মানুষজনকে করোনা নিয়ে সচেতনতা চালাচ্ছি।’
তিনি বলেন, তবে সাধারণ মানুষের মাঝে এখনও দৃশ্যমান সচেতনতা আসেনি। পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে লোকজন জমায়েত হচ্ছে। জনসাধারণকে বুঝানো অনেক কষ্টসাধ্য কাজ। তবুও আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি।
এই বিষয়ে সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক জয়নিউজকে বলেন, নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য সবসময় আমরা আইনের মধ্যে থেকে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে চাই। সাধারণ নাগরিকের একটু সময়ের অনিরাপদ আচরণ আমাদের সবাইকে নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে দিতে পারে। এবং এই নিরাপত্তাহীনতার দাম দিতে হবে জীবনের বিনিময়ে।
‘তাই আমাদেরকে যতটা কঠোর হতে হয় আমরা তার চেয়েও বেশি কঠোর হয়ে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। আমরা এই কাজে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। নগরবাসীর যেকোনো প্রয়োজনে সিএমপি সবসময় পাশে থাকবে।’
বিজয় বসাক আরো বলেন, সম্মানিত নাগরিকরা যেকোনো ধরনের প্রয়োজনে যাতে সিএমপির হটলাইনে ফোন করেন। এতে করে পুলিশ তাৎক্ষণিক নাগরিকের বাসায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ পৌঁছে যাবে। তবুও যাতে নাগরিকরা সচেতন হয়। এই মহামারিতে সচেতনতা সবার আগে কাম্য।