‘আমার ছেলেকে বাঁচাও, আমার ছেলেকে বাঁচাও।’- মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও নিজের কথা না ভেবে সন্তানের জন্য এমন আকুতি জানিয়ে পরপারে পাড়ি জমালেন রেসলার শ্যাড গ্যাসপার্ড।
নিজের জীবনের বিনিময়ে বাঁচিয়েছেন ১০ বছরের ছেলে আরিয়াহকে। আর ৩৯ বছর বয়সে সমুদ্রের গভীরে ডুবে মৃত্যুর কোলে পতিত হতে হলো গ্যাসপার্ডকে।
গত রোববার লকডাউনের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র সৈকত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। সেদিনই ছেলেকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার ভেনিস সৈকতে ঘুরতে গিয়েছিলেন গ্যাসপার্ড। হঠাৎ এক ঢেউ এসে তীর থেকে প্রায় ৭৫ গজ দূরে ছিটকে নিয়ে যায় বাবা-ছেলেকে।
সেখানকার উপস্থিত লাইফগার্ডের চোখে পড়ামাত্রই বাবা-ছেলেকে সাহায্য করতে ছুটে যায় তাঁরা। লাইফগার্ডকে দেখে নিজের কথা না ভেবে গ্যাসপার্ড অনুরোধ করছিলেন শুরুতে ছেলেকে বাঁচানোর জন্য। লাইফগার্ড তাই ছেলে আরিয়াহকে উদ্ধার করে তীরে রেখে মিনিটখানেক সময়ের মধ্যে ফিরে যান গ্যাসপার্ডের কাছে। কিন্তু আর দেখা মিলেনি তাঁর। বড় এক ঢেউয়ে তলিয়ে যান গ্যাসপার্ড।
সৈকতের লাইফগার্ড প্রধান কেনিচি হাসকেট এই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, তীর থেকে প্রায় ৭৫ গজ দূরে দুজন মানুষকে বাঁচানোর জন্য আমাদের লাইফগার্ড কর্মী ছুটে যায়। গ্যাসপার্ড সেই লাইফগার্ডকে দেখতে পাচ্ছিল এবং আরিয়াহর দিকে আঙুল দিয়ে ইশারা করছিল। গ্যাসপার্ডের শেষ কথা ছিল, আমার ছেলেকে বাঁচাও, আমার ছেলেকে বাঁচাও।
হাসকেট আরও বলেন, মাত্র ৬০ সেকেন্ডের ভেতরেই সেই লাইফগার্ড গ্যাসপার্ডকে উদ্ধারের জন্য যায়। সে গ্যাসপার্ডকে দেখেছিল। তখনই একটা ঢেউ এসে গ্যাসপার্ডকে ডুবিয়ে দেয়। আর দেখা যায়নি তাকে।
পরে তার খোঁজে প্রায় তিনদিন ধরে সাতটি ভিন্ন ভিন্ন অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল এলাকা খুঁজেও হদিস মেলেনি গ্যাসপার্ডের। বুধবার (২০ মে) সকালে সমুদ্র থেকে ভেসে আসে একটি মরদেহ। পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস সেটিকে গ্যাসপার্ডের মরদেহ হিসেবে শনাক্ত করেছে।