খাগড়াছড়ির রামগড়ের খাগড়াবিল বাজারের পাশে লালছড়ি সংযোগ সড়কে সেতু নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮ ও ২০১৯ অর্থবছরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এটি নির্মিত হচ্ছে।
এদিকে নকশা বহির্ভূত ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারসহ নির্ধারিত দুইমাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও দীর্ঘ নয় মাসেও সেতু নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে গ্রামের হাজার হাজার গ্রামবাসী। তবে গ্রামবাসীর সুবিধার্থে খালে বাঁধ দিয়ে অস্থায়ীভাবে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হলেও তা টেকসই ছিলনা। সেতু নির্মাণে বিলম্বিত হওয়ায় পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে গেলেও পুনরায় নির্মাণ না করায় দুর্ভোগে পড়েছে গ্রামবাসীরা।
সেতু নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খাগড়াছড়ির রানজনী এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর বিকেন দেওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে সাব-ঠিকাদার ইলিয়াছ মুন্সি জয়নিউজকে বলেন, সঠিক সময়ে নির্মাণ শ্রমিক না পাওয়ায় নির্মাণকাজ বিলম্বিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মনসুর আলী জয়নিউজকে বলেন, কাজটি দ্রুত শেষ করতে বারবার ঠিকাদারকে বলা হচ্ছে। তবে অনিয়মের ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবেনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পে ২০১৯ সালের অর্থবছরে প্রায় ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে রামগড় ইউনিয়নে তিনটি সেতু নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে খাগড়াবিল-লালছড়ি একটি। লটারির মাধ্যমে খাগড়াছড়ির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানজনী এন্টারপ্রাইজ সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ পায়। কিন্তু কাজটি পাওয়ার পর ঠিকাদারের বিরুদ্ধে সেতু নির্মাণে বিলম্ব, নকশাবহির্ভুত সেতু নির্মাণ, পুরাতন সেতু অক্ষত রেখেই তার উপর নতুন সেতু নির্মাণ, নিম্নমানের রড, বালু, পাথরের ব্যবহারসহ বিকল্প সেতু নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, শুরুতেই ঠিকাদারের লোকজন নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুইমাস পর নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করেন।
এসময় তাদের বাঁধা দেওয়া সত্বেও রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ঠিকাদার প্রতিমাসে হঠাৎ কয়েকদিন পরপর তাঁর ইচ্ছেমত নির্মাণকাজ করে আবার উধাও হয়ে যান। এলাকাবাসীর অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ কৃষিনির্ভর এলাকায় সময়মত সেতুটি নির্মিত হলে গ্রামবাসীকে এ দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। এব্যাপারে তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্বপ্রদীপ ত্রিপুরা জয়নিউজকে বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে সেতুটির নির্মাণ পরিদর্শনে এসে নির্মাণে অনেক অনিয়মের সত্যতা দেখলাম। উপজেলার এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু এতোবড় অনিয়ম গ্রহণযোগ্য নয়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে তিনি জানান।