প্রায় এক মাস তিনি ভূমি অফিসের কর্তাদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছেন। শুধু একটি খতিয়ানের জন্য অনুরোধ করেছেন শতবার। কেউ শোনেনি তার কথা, তাই হাল ছেড়ে রাজ্যের অভিমান আর অভিযোগ নিয়ে ফিরছিলেন বাড়ি। কিন্তু গল্পের শেষটা এতোটা ট্র্যাজিক হয়নি একটা মানুষের অন্যরকম এক ‘ম্যাজিকে’! করিৎকর্মা সেই মানুষটির নাম রুহুল আমিন। হাটহাজারীর নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
জানা যায়, হাটহাজারী উপজেলার ২ নম্বর ধলই ইউনিয়নের কাটিরহাট এলাকার বাসিন্দা এ বি এম জাহেদ হোসেন একটি খতিয়ান সৃজনের জন্য উপজেলা ভূমি অফিসে প্রায় এক মাস ধরে যাওয়া-আসা করছিলেন। সোমবার দুপুরের দিকে জাহেদ নিত্যদিনের মতো উপজেলা ভূমি অফিসে এসেছিলেন তার খতিয়ানটি সৃজন হয়েছে কি না জানতে। তবে ওই খতিয়ান সৃজনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা অফিসে ছিলেন না।
দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বিকাল ৫টায় হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় তার সাথে দেখা হয় হাটহাজারীর নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমিনের সাথে। এ সময় উপজেলা ভূমি অফিস পরিদর্শনে যাওয়া ইউএনও তার (জাহেদ) সাথে কথা বলেন এবং তার ভূমি অফিসে আসার কারণ জানতে চান।
ভুক্তভোগী জাহেদ খতিয়ান সৃজনের বিষয়টি সম্পর্কে ইউএনওকে বিস্তারিত খুলে বলেন। তার কথা শুনে ইউএনও বিষয়টি নিয়ে ভূমি অফিসের কর্তাদের সাথে আলাপ করেন এবং তাৎক্ষনিক ওই ব্যক্তির সৃজনকৃত খতিয়ানের অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করার নিদের্শনা দেন। আধা ঘণ্টা পর ওই ব্যক্তি তার সৃজনকৃত খতিয়ান হাতে পান।
পরে এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে এ বি এম জাহেদ হোসেন বলেন, ইউএনও স্যার যখন আমার খতিয়ানের বিষয়টি নিয়ে আজ সন্ধ্যায় তদারকি করেন তখনই জানলাম আমার খতিয়ানটি আসলে আরো কয়েক দিন আগেই সৃজন হয়ে গেছে। অফিসের কর্তারা শুধু শুধু আমাকে আজ নয় কাল এমন করে সময় পার করছিলেন।
এ বিষয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন জয়নিউজকে জানান, আমি আজ বিকাল ৫টায় ভূমি অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে পৌঁছে দেখি বেশ কিছু অনাহুত লোকজন ঘোরাঘুরি করছেন। তবে আমার উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে গা ঢাকা দেয়। এ সময় এক ব্যক্তিকে দেখি ভূমি অফিস থেকে বের হচ্ছেন। তার কাছ থেকে সমস্যার কথা জেনে বিষয়টি নিয়ে একটু খোঁজ করতেই জানলাম ওই খতিয়ান সৃজনের কাজ আগেই হয়ে গিয়েছিল। আমি পরে ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের বলে তাকে খতিয়ান পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
জয়নিউজ/হোসেন