জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভোগা চিকিৎসক আরিফ হাসানকে নেওয়া হয়েছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। কিন্তু নেওয়ার চার ঘন্টা পার হলেও তার কাছে যাননি কোনো চিকিৎসক বা নার্স। এমন অভিযোগ তার ছোট বোন শায়লা হাসানের স্বামী সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) মুনির উদ্দিন হাসানের।
তিনি বলেন, শুক্রবার (১২ জুন) চমেকে প্রথমে নিয়ে গেলে সেখানে ৪ ঘণ্টা ধরে কোনো চিকিৎসক তার পাশে আসেননি। কেবিনে রেখে যে চিকিৎসা দেবে ওইরকম কেবিনও ছিল না। এছাড়া ওই মুহূর্তে তার আইসিইউ সাপোর্ট লাগতো। কিন্তু আইসিইউও মেলেনি। পরে বাধ্য হয়ে আমরা ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে সারাদিন চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে রাত ৯টার দিকে চমেকে আইসিইউর ব্যবস্থা করেন ডা. রহমান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে চমেকে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় আরিফ হাসানের।
চিকিৎসক হয়েও চিকিৎসার অবহেলায় এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর মেজর মুনির উদ্দিন হাসান। তিনি বলেন, প্রথমে চমেকে যখন নেওয়া হয়েছিল তখন আরিফকে অক্সিজেন দেয়া হলে, একটু চিকিৎসা পেলে হয়তো এই যাত্রায় সে বেঁচে যেত। কিন্ত কোনো চিকিৎসক পাশে আসেননি। করোনা সন্দেহে একজন চিকিৎসকই যদি চিকিৎসা না পান এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে।
মৃত ডা. আরিফ হাসান ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪৯তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার আবেদিন কলোনি এলাকায় থাকতেন। ব্যক্তিগত চেম্বারে তিনি রোগী দেখতেন। গত ২ জুন থেকে আরিফ হাসান জ্বরে ভুগছিলেন।
শুক্রবার (১২ জুন) সকালে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় চমেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রথমে ৪ ঘণ্টা ধরে কোনো চিকিৎসা না পেয়ে ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সারাদিন ট্রিটমেন্টে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ওইদিন রাতে মারা যান তিনি।
বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, তার (আরিফ হাসান) চিকিৎসায় চিকিৎসকরা পাশে আসেনি এ ধরনের অভিযোগ কেউ আমাদের দেয়নি। তবে প্রথমে যখন চমেকে আনা হয় তখন আইসিইউ পায়নি। পরে অবশ্য রাতে আইসিইউ ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আফতাবুল ইসলাম বলেন, ডা. আরিফ হাসানের করোনার উপসর্গ ছিল। তিনি পরীক্ষায়ও করেছেন, তবে রিপোর্ট পাননি। কারণ এখন রিপোর্ট পেতে সময় লাগছে।
চিকিৎসা না পাওয়ার বিষয়ে পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, চমেক হাসপাতালে তাকে আনার আগে সংশ্লিষ্টদের বলে রাখা হয়েছিল। চিকিৎসা না পাওয়ার কথা নয়।