বহুল আলোচিত রকি বড়ুয়াকে গত ১২ মে নগরের পাঁচলাইশ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। এরপর থেকে পুলিশ হেফাজতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ‘চিকিৎসাধীন’ আছেন তিনি। দেড় মাস আগে গ্রেপ্তার হলেও এখন পর্যন্ত রকি বড়ুয়াকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়নি। এ জন্য চমেক হাসপাতালকে দায় দিচ্ছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর চমেক হাসপাতালে ‘চিকিৎসাধীন’ থাকার সুযোগে রকি বড়ুয়ার সঙ্গে থাকছেন তার স্ত্রী ও পরিবারের লোকজন। এছাড়া রকির সেবায় হাসপাতালে নিয়োজিত আছেন তার কয়েকজন সহযোগিও। এছাড়া বিভিন্ন লোকজন হাসপাতালে গিয়ে অবাধে রকি বড়ুয়ার সঙ্গে বৈঠক করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
চমেক সূত্রে জানা যায়, ৩৬নং ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন রকি বড়ুয়া। সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী। চার দিন আগে ২৬নং ওয়ার্ডে রকি বড়ুয়ার পায়ে অপারেশন হয়। পায়ের চামড়ার সমস্যা নিয়ে এই অপারেশনটি হয়েছে। এরপর তাকে ৩৬নং ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। রকি বড়ুয়া এখন অনেকটাই সুস্থ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রেপ্তার হওয়া কোনো আসামির দীর্ঘমেয়াদে চিকিৎসার প্রয়োজন হতেই পারে। কিন্তু এতো দীর্ঘসময় আদালতে হাজির না হয়ে, কারাগারে প্রবেশ না করে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা নেওয়ার নজির খুবই কম। পুলিশ হেফাজতে অযথা দীর্ঘসময় ধরে সাধারণ রোগীর মতো করে রকি বড়ুয়ার হাসপাতালে থাকা নিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: সাঈদীর মুক্তির দায়িত্ব নেওয়া সেই রকি বড়ুয়া অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার
এর আগে গ্রেপ্তারের পর সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, অস্ত্র আইন ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধরায় রকি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় চারটি মামলা করে র্যাব। এসব মামলা এখন পাঁচলাইশ থানার এসআই রিতেন কুমার সাহা, এসআই ইমাম হোসেন, এসআই আশেকুর রহমান ও এসআই আশরাফুল কবির তদন্ত করছেন। তবে মামলাগুলোর তদন্তভার হস্তান্তর করার জন্য র্যাবের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পাঁচলাইশ থানাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যেকোন সময় মামলার তদন্তভার বুঝে নেবে র্যাব।
এদিকে দেড় মাস ধরে রকি বড়ুয়ার হাসপাতালে পড়ে থাকা নিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রয়োজনে কারাগারের প্রিজন সেলের মাধ্যমে রকি বড়ুয়া হাসপাতালে থাকুক। তখন রকি বড়ুয়া কারাগারের অধীনে থাকবে। হাসপাতালের প্রিজন সেলে যে কেউ সহজে প্রবেশ করতে পারবে না। এখন প্রিজন সেলে না থাকায় রকির কাছে মানুষের আসা-যাওয়া সেভাবে থামাতে পারছে না পুলিশ।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, রকি বড়ুয়াকে যত দ্রুত আদালতে হাজির করা যায় ততই আমাদের জন্য ভালো। কিন্তু চেষ্টা করেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না। রকি বড়ুয়াকে যদি ডাক্তাররা ছাড়পত্র না দেয়, আমরা তো তাকে জোর করে নিতে পারি না। আমি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের অনুরোধ করেছি, যাতে তারাতারি রকি বড়ুয়াকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি। কেন এতো দিন ধরে রকি বড়ুয়া হাসপাতালে আছে- সেটা খতিয়ে দেখা হবে।