মহামারি করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক কোটি। এখন পর্যন্ত করোনা ঠেকানোর সঠিক দিশা পাচ্ছে না কেউ।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রেসাস সোমবার (২৯ জুন) বলেছেন, করোনার আক্রমণের ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা এখনো বাকি’। ভার্চ্যুয়াল ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার সঠিক পদক্ষেপ না নিলে আরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসের শিকার হবে। খবর বিবিসির।
তেদরোস আধানম বলেন, সব দেশের সরকারকে সঠিক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে। করোনা ঠেকাতে আগের বার্তাই তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা, শনাক্ত, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন।’
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই চলমান পরিস্থিতির অবসান হোক। আমরা চাই প্রতিটি জীবন বাঁচুক। কিন্তু কঠিন বাস্তবতা হলো, এ পরিস্থিতির অবসান হচ্ছে না। করোনা মোকাবিলায় অনেক দেশ কিছু কিছু উন্নতি করেছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটি দ্রুতগতিতে ছড়াচ্ছে।
ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান করোনা মোকাবিলায় সফল হিসেবে জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নাম উল্লেখ করেন। বিভিন্ন দেশের সরকারকে এই দেশগুলোর নীতি অনুসরণ করার আহ্বানও জানান তিনি।
জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, করোনায় প্রাণহানির দিক দিয়ে সবার ওপরে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মারা গেছেন। ৫৭ হাজারের বেশি প্রাণহানির নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল। তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। সেখানে ৪৩ হাজারের বেশি মারা গেছেন। প্রায় ৩৫ হাজার প্রাণহানি নিয়ে এরপরই আছে ইউরোপের আরেক দেশ ইতালি।
এছাড়া ক্রমান্বয়ে থাকা অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স (২৯,৭৮১), স্পেন (২৮,৩৪৩), মেক্সিকো (২৬,৬৪৮), ভারত (১৬,৪৭৫), ও ইরান (১০, ৫০৮ জন)।
করোনা রোগী শনাক্তের দিক দিয়েও শীর্ষ অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এ পর্যন্ত সাড়ে ২৫ লাখ করোনারোগী শনাক্ত হয়েছে। ব্রাজিলে এই সংখ্যা সাড়ে ১৩ লাখ। শনাক্তের দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে রাশিয়া (সাড়ে ৬ লাখ)। তবে রাশিয়ায় প্রাণহানির সংখ্যা নয় হাজারের কিছু বেশি। চতুর্থ স্থানে আছে ভারত (সাড়ে ৫ লাখ)। যুক্তরাজ্যে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা অন্তত ৩ লাখ ১৩ হাজার।
বিবিসির খবরে বলা হয়, এখন পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, করোনা তার মরণকামড় বসিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে। তবে ইতোমধ্যে এটা লাতিন আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় দ্রুত ছড়াচ্ছে। শনাক্ত রোগী ও মৃত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জুলাইয়ের শেষ নাগাদ এ অঞ্চলে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সোমবার পর্যন্ত মারা গেছেন ১ হাজার ৭৮৩ জন। আর শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৮০১ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫৭ হাজার ৭৮০ জন। বিশ্বে সুস্থ হওয়ার এই সংখ্যা ৫১ লাখ ৬০ হাজারের মতো।