দৈনিক আজাদী, পূর্বকোণ ও পূর্বদেশ পত্রিকায় ৭ জুলাই স্ব স্ব কর্তৃপক্ষের বরাতে অভিন্ন বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে সিইউজে নেতৃবৃন্দ করোনাকালীন এই মহাদুর্যোগে অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে আহ্বান জানান এসব পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিক-কর্মচারীদের প্রতি মানবিক আচরণ করার।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, কর্তৃপক্ষের বক্তব্যে এসব পত্রিকায় নির্ধারিত সময়ে বোনাসসহ বেতন-ভাতা পরিশোধের যে দাবি করা হয়েছে তা পুরোপুরি সঠিক নয়। দীর্ঘদিন ধরে এসব পত্রিকায় সাংবাদিক-কর্মচারীদের অষ্টম ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কোনো কোনো পত্রিকা আংশিক ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অবশিষ্ট অংশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পালন করেনি। নবম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ কমিটি ঘোষিত ৪৫% মহার্ঘভাতা থেকেও সাংবাদিক-কর্মচারীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এমনকি নিয়মিত ইনক্রিমেন্টও দেওয়া হচ্ছে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দৈনিক আজাদীতে ২০১৫ সালের ২৫ মে সিইউজের সঙ্গে অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের চুক্তি স্বাক্ষর করে কর্তৃপক্ষ। ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী প্রতিবছর ইনক্রিমেন্ট হওয়ার কথা থাকলেও চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে অদ্যাবধি পত্রিকাটিতে মাত্র একটি ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় কর্তৃপক্ষ ওয়েজ বোর্ড থেকে বাদ পড়া সাংবাদিকদের পরবর্তীতে ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। নবম ওয়েজ বোর্ড কমিটি সাংবাদিক-কর্মচারীদের জন্য ৪৫% মহার্ঘভাতা ঘোষণা করলেও আজাদী কর্তৃপক্ষ মহার্ঘভাতা দেয়নি। সাংবাদিক-কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা দিতে সিইউজের পক্ষ থেকে আজাদী কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও এর বাস্তবায়ন হয়নি। গত ঈদুল ফিতরের আগে পত্রিকাটিতে কর্মরতদের পূর্ণ বোনাস দেওয়া হয়নি। এমনকি পত্রিকাটিতে নৈশ পালায় দায়িত্বরত সাংবাদিকদের যাতায়াতের জন্য পরিবহনের কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ করোনা মহামারির এই দুঃসময়েও গভীর রাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকদের অফিসে যাতায়াত করতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত অমানবিক।
দৈনিক পূর্বকোণের বিষয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৫ সালের ৭ মে সিইউজের সঙ্গে অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের চুক্তি স্বাক্ষর করে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় কর্তৃপক্ষ ওয়েজ বোর্ড থেকে বাদ পড়া সাংবাদিকদের পরবর্তীতে ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। পত্রিকাটিতে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে সাংবাদিকদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়। কিন্তু চলতি বছর নির্দিষ্ট সময়ের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়নি। বরং ওয়েজ বোর্ডের বাইরে থাকা সাংবাদিকদের পরবর্তীতে নিয়মবহির্ভূতভাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পত্রিকাটিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের এ প্রবণতা অতীতেও দেখা গেছে। নবম ওয়েজ বোর্ড কমিটি সাংবাদিক-কর্মচারীদের জন্য ৪৫% মহার্ঘভাতা ঘোষণা করলেও পূর্বকোণ কর্তৃপক্ষ দেয়নি। সাংবাদিক-কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা দিতে সিইউজের পক্ষ থেকে পূর্বকোণ কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। গত ঈদুল ফিতরের আগে কর্মরতদের পূর্ণ বোনাসও দেওয়া হয়নি।
দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার ব্যাপারে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৬ সালের ৬ মার্চ সিইউজের সঙ্গে অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের ৬০% প্রদানের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে মাত্র ২০% বাস্তবায়ন করলেও অদ্যাবধি ৮ম ওয়েজ বোর্ড রোয়েদাদ পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করেনি। ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী প্রতিবছর ইনক্রিমেন্ট হওয়ার কথা থাকলেও চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে অদ্যাবধি পত্রিকাটিতে কোনো ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়নি। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় কর্তৃপক্ষ ওয়েজ বোর্ড থেকে বাদ পড়া সাংবাদিকদের পরবর্তীতে ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। নবম ওয়েজ বোর্ড কমিটি সাংবাদিক-কর্মচারীদের জন্য ৪৫% মহার্ঘভাতা ঘোষণা করলেও পূর্বদেশ কর্তৃপক্ষ দেয়নি। সাংবাদিক-কর্মচারীদের বৈশাখী ভাতা দিতে সিইউজের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। গত ঈদুল ফিতরের আগে পত্রিকাটিতে কর্মরতদের পূর্ণ বোনাসও দেওয়া হয়নি।
সিইউজে নেতৃবৃন্দ করোনা মহামারির এই দুঃসময়ে অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে সবার মানবিক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেসব সাংবাদিক-কর্মচারী এখনো পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তাঁদের ন্যায্য পাওনা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে নেতৃবৃন্দ পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
জয়নিউজ
