নগরের পাঁচলাইশের প্রবর্তক পাহাড়ের নীচে অবস্থিত ৫৪ বছরের পুরনো সঙ্গীত ভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। হামলাকারিরা জরাজীর্ণ টিনশেডের ঘরের সামনের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হারমোনিয়াম-তবলাসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করে।
https://www.facebook.com/sangeetbhaban.bd/videos/pcb.1348348162026918/300637871347087
জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ প্রিয়দারঞ্জন সেনগুপ্ত ও বনবীথি সেনগুপ্তার হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় সঙ্গীত ভবন। ১৯৬৮ সালে সঙ্গীত ভবনের স্থান হয় প্রবর্তক পাহাড়ের পাদদেশে। মেহেদীবাগে থাকাকালীন সময়ে প্রবর্তক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা বীরেন্দ্র লাল চৌধুরীর অনুরোধে ওস্তাদ প্রিয়দারঞ্জন এখানে এসে শুরু করেন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। শুরুতে সব ঠিক থাকলেও ২০১৬ সালে ভবনটির ভাড়া পরিশোধ নিয়ে প্রবর্তক সংঘের সঙ্গে শুরু হয় ঝামেলা।
প্রিয়দারঞ্জন সেনগুপ্তের ছেলে বিভাষ সেনগুপ্ত জয়নিউজকে বলেন, ৫৪ বছরের পুরনো এ প্রতিষ্ঠানটা ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়েছে। নিয়ে গেছে হারমোনিয়াম, তবলা ও তানপুরা।
সঙ্গীত ভবনের অধ্যক্ষ কাবেরী সেনগুপ্তা জয়নিউজকে বলেন, প্রায় আট গণ্ডা জমিতে স্থাপিত ‘সঙ্গীত ভবন’ এখন তার অস্তিত্ব হারানোর আশঙ্কায় ভুগছে। প্রবর্তক সংঘের কাছে প্রথমে সরাসরি ভাড়া পরিশোধ করা হতো। পরবর্তীতে তারা এভাবে ভাড়া নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ডাক বিভাগের মাধ্যমে দুই মাস ও পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করে আসছি।
https://www.facebook.com/sangeetbhaban.bd/videos/pcb.1348348162026918/925514241207845
তিনি আরো বলেন, দুই সপ্তাহ আগে ভবনের সংস্কার কাজ করার সময় বাধা দেওয়া হয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়। এরপর সেখানে পুলিশ পাহারাও দেওয়া হয়। শুক্রবার (১৭ জুলাই) সকালে হঠাৎ পুলিশের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
এদিকে প্রবর্তক সংঘের (বাংলাদেশ) সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জয়নিউজকে বলেন, সঙ্গীত ভবন ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে কাবেরী সেনগুপ্তার বাবা প্রিয়দারঞ্জন সেনগুপ্তের সঙ্গে প্রবর্তক সঙ্গের চুক্তি হয়েছিল। তিনি মৃত্যুবরণ করার পর তার পরিবারের সদস্যদের আমাদের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা মানেনি। উল্টো জোরপূর্বক জায়গা দখলে রেখেছে। তারা ভবনটি সংস্কার করতে চাইলে আদালতের কোনো আদেশ দেখাতে পারেনি। এ অবস্থায় শুক্রবার আবারও ভবনের দরজা-জানালা মেরামত করতে গেলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
পাঁচলাইশ থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই সাদেকা আফরোজা জয়নিউজকে বলেন, সঙ্গীত ভবন সংস্কার নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। শুক্রবার সকালে ওই ভবনে ভাঙচুরের খবর পেয়ে এসআই নূরুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলে তিনি জানান।