কক্সবাজার জেলায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয়কেন্দ্রের আওতায় ৬০০ জনকে ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন শেষে উপকারভোগীদের কাছে ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর করেন।
শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রথম পর্যায়ে ২০টি পাঁচতলা ভবনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষা বৃহৎ এ প্রকল্পে পর্যায়ক্রমে ৪ হাজার ৪৪৮টি পরিবার ফ্ল্যাট পাবে।
১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছাসে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মহেশখালী কুতুবদিয়াসহ উপকূলের বিশাল এলাকা সমুদ্রে বিলীন হয়ে যায়। এসব মানুষ জীবনের তাগিদে আশ্রয় নেয় কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দরের পশ্চিমে বালিয়াড়ী ও ঝাউবাগান এলাকায়। যেখানে বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করছে। ২০১১ সালে ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে এক জনসভায় এসব জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারকে পুনর্বাসনের নির্দেশনা দেন। সেই নির্দেশনা অনুসারে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রথম পর্যায়ে পাঁচতলার ২০টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
এ প্রকল্পে মোট ১৩৯টি ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি পাঁচতলা ভবনে থাকছে ৪৫৬ বর্গফুট আয়তনের ৩২টি করে ফ্ল্যাট।
প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন জানান, প্রকল্প এলাকায় ১৪টি খেলার মাঠ, সবুজ জায়গা, মসজিদ, মন্দির, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পুলিশ ও ফায়ার স্টেশন, তিনটি পুকুর, নদীতে দুটি জেটি ও দুটি বিদ্যুতের সাবস্টেশন থাকবে।
এছাড়া থাকবে ২০ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ৩৬ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বর্জ্য পরিশোধন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, তীর রক্ষা বাঁধ, ছোট সেতু, পুকুর-খাল।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা ফ্ল্যাট পাবেন তাদের ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা হবে। প্রকল্প এলাকায় একটি শুঁটকি মহালও থাকবে এবং এখানে পর্যায়ক্রমে বিক্রয়কেন্দ্র ও প্যাকেজিং শিল্পও গড়ে তুলবে সরকার।
ভবনগুলোর নাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই রেখেছেন। প্রথম ধাপে নির্মিত ভবনগুলোর নাম হলো- দোঁলনচাপা, কেওড়া, রজনীগন্ধা, গন্ধরাজ, হাসনাহেনা, কামিনী, গুলমোহর, গোলাপ, সোনালী, নীলাম্বরী, ঝিনুক, কোরাল, মুক্তা, প্রবাল, সোপান, মনখালী, শনখালী, বাঁকখালী, ইনানী ও সাম্পান।