অন্তর্কোন্দল আর শৃঙ্খলার অভাবে নগরের ছাত্র রাজনীতিতে একরকম প্রাণহীন নগর ছাত্রদল। কেবল দলীয় কর্মসূচিতে গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেন নগর ছাত্রদলের নেতারা।
সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১১ জুলাই গাজী মো.সিরাজ উল্লাহকে সভাপতি ও বেলায়েত হোসেন বুলুকে সাধারণ সম্পাদক করে নগর ছাত্রদলের ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন হয়। তিন মাসের জন্য গঠিত এই কমিটি এখন ৭ বছর মেয়াদ পার করছে। এর মধ্যে এ কমিটির নেতাদের মধ্যে সবাই কেউ বিএনপি, কেউ যুবদল ও কেউ স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে ঢুকে গেছেন। তারা এখন একসঙ্গে দুটি সংগঠনের পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এবার সেই আলোচিত-সমালোচিত পুরাতন কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটির উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।
এদিকে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার আগেই শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। দলের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, যারা আন্দোলন বা দলীয় কর্মসূচিতে নগর বিএনপির কার্যালয়ে কোনোসময় আসতেন না। যাদের শুধু দেখা মিলতো কেন্দ্রের নেতাদের সঙ্গে সেলফি তোলার সময়। এবার তারাও আহ্বায়ক কমিটিতে পদ পেতে সরব হয়েছেন। স্থানীয় ও কেন্দ্রের প্রভাবশালী নেতাদের মাধ্যমে জোর লবিং করে আসন্ন কমিটিতে পদ ভাগিয়ে নিতে দিনরাত এক করছেন তাঁরা।
সূত্র আরো জানায়, ২০১৩ সালে নগর ছাত্রদল কমিটি হওয়ার পর নগর বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযুক্তরাও এ কমিটিতে পদ পেতে ফরম জমা দিয়েছেন। কামরুল ইসলাম কুতুবি, শরিফুল ইসলাম তুহিন, সাইফুল আলমসহ এমন কয়েকজন অভিযুক্ত নেতা আছেন এ তালিকায়।
ছাত্রদলের তৃণমূল কর্মীরা মনে করছেন তাদের লবিংয়ের কারণে বাদ পড়তে পারেন অনেক সক্রিয় ও ত্যাগী নেতা।
জানা যায়, নগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করার জন্য ৩১ বা ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে। এর জন্য ৬০০ জন পদ প্রত্যাশী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। নগর ছাত্রদলের নেতারা যাচাই-বাচাই করে বিবাহিতসহ ৩৬২ জনের জীবনবৃত্তান্ত পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কাছে।
এব্যাপারে নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ জয়নিউজকে বলেন কমিটির জন্য যাচাই বাচাই করে ৩৬২ জনের জীবরবৃত্তান্ত কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিবাহিত আছেন। কারণ তারা দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন। কিন্তু কমিটি না হওয়ায় তারা কোনো পদ পাননি। তাই নতুন পুরাতনের সমন্বয়ে আহ্বায়ক কমিটি করার জন্য হাইকমান্ডের কাছে সুপারিশ করেছি।
নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু জানান, যারা সরকারবিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম নীরব ছিল, দলের দুঃসময়ে ছিল না, তাদের কমিটিতে আসার সুযোগ নেই। নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিতে মূ্ল্যায়নে করা হবে যোগ্য, ত্যাগী ও মেধাবীদের।
নতুন ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিকে নিয়ে প্রত্যাশা জানতে যোগাযোগ করা হলে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন জয়নিউজকে বলেন ,দলের জন্য যারা কাজ করেছে তারা যেন আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পায়। যারা শুধুমাত্র পদের জন্য সরব হয়েছে তাদেরকে কমিটিতে না রাখার জন্য দলের হাইকমান্ডের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
জয়নিউজ/পিডি