পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের মামলায় ওসি প্রদীপ কুমারসহ সাত জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ নির্দেশ দেন কক্সবাজার জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলালউদ্দিন।
কক্সবাজার জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ওসি প্রদীপ কুমারসহ সাত জন আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ সময় কোনো রিমান্ড চাওয়া হয়নি।
ওই সাত আসামি হলেন- মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের প্রত্যাহারকৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়া।
অপর দুই আসামি এসআই টুটুল ও কনস্টেবল মোস্তফা আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি। এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ পাহারায় আসামিদের আদালতে নেওয়া হয়।
বুধবার (৫ আগস্ট) দুপুরে নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যার সময় টেকনাফ থানার ওসির দায়িত্বে থাকা প্রদীপ কুমারসহ নয়জনের বিরুদ্ধে ‘হত্যা মামলা’ দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে রাতে টেকনাফ থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তভার র্যাবকে দেন আদালত।
প্রসঙ্গত, দুই বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া সিনহা মো. রাশেদ খান ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য গত প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় অবস্থান করছিলেন। আরও তিন সঙ্গীকে নিয়ে তিনি উঠেছিলেন নীলিমা রিসোর্টে।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা রাশেদ।
ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথা জানিয়ে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন।’ পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। এই ঘটনায় পুলিশ মামলাও করে।
তবে পুলিশের এই ভাষ্য নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতিনিধি নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।