পর্যটকে প্রাণ পাচ্ছে কক্সবাজার

করোনাভাইরাস মহামারির দীর্ঘ চার মাস পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার ছিল পর্যটকশূন্য। আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ আগস্ট থেকে কক্সবাজর খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও ইতোমধ্যে কক্সবাজারে ভিড় করেছে হাজার হাজার পর্যটক।

- Advertisement -

আশপাশের এলাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও কক্সবাজারে শুরু  হয়েছে পর্যটকের আনাগোনা। তাই আবার পুরনো রূপে ফিরতে শুরু করেছে বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্রসৈকত।

- Advertisement -google news follower

সরজমিনে দেখা যায়, সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে প্রতিদিন ভিড় করছে কয়েক হাজার পর্যটক। প্রিয়জনকে নিয়ে আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ে সময় কাটাচ্ছেন একান্তে।

স্ত্রী আর দুই শিশুকে নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছেন কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে আমাদের সবার জীবনযাত্রা। অনেকদিনতো লকডাউনে ছিলাম। বাসায় থাকতে থাকতে বাচ্চারা খুব বিরক্ত। এবার ঈদেও তেমন কোথাও যেতে পারিনি। তাই কক্সবাজার এসেছি ঘুরতে। বাচ্চাদের সময় খুব আনন্দে কাটছে এখানে।

- Advertisement -islamibank

পর্যটকে প্রাণ পাচ্ছে কক্সবাজার

এদিকে ৬ জন বন্ধু মিলে ঢাকা থেকে এসেছেন সোহেল হোসেন। তিনি বলেন, আসলে আসার ইচ্ছে অনেকদিন আগে থেকে ছিল। কিন্তু লকডাউনের কারণে আসতে পারিনি। করোনার কারণে অনেকদিন বাসায় বন্দি অবস্থায় ছিলাম। মনে হচ্ছে যেন নতুন করে প্রাণ ফিরেছে দেহে।

সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলেও বন্ধ প্রায় অধিকাংশ হোটেল, রিসোর্ট, রেস্তোরা, মার্কেট ও দোকান। তবে কিছু হোটেল খোলা রেখেছে একদল মালিকপক্ষ। এদিকে কক্সবাজারে পর্যটকদের আগমনে দারুণ খুশি সৈকতকে ঘিরে যারা জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা।

কথা হয় বিশ বছর বয়সী ঘোড়াচালক আব্দুল্লাহর সঙ্গে। সে প্রায় অর্ধযুগ ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার রয়েছে ৫টি ঘোড়া। আগে তার দিনে আয় হতো দুই থেকে তিন হাজার টাকা। সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার পর তার আয় হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। তবুও সে খুশি।

আব্দুল্লাহ জানায়, প্রতি মাসে একটা ঘোড়ার পেছনে খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। এ টাকাও তো তুলতে পারছি না গত চার মাস ধরে। এভাবে চলতে থাকলে তো ঘোড়াগুলোও মরে যাবে। তখন তো আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। এখন কম টাকা ইনকাম হলেও কিছুতো হচ্ছে। তাই একটু স্বস্তি।

পর্যটকে প্রাণ পাচ্ছে কক্সবাজার

সৈকতকে ঘিরে রয়েছে হাজারো ফটোগ্রাফারের জীবিকা। প্রতি ছবি ২ থেকে ৫ টাকা। কিন্তু সৈকত বন্ধ থাকার কারণে তাদেরও জীবিকা বন্ধ। ফটোগ্রাফার রুবেল হোসেন তিন বছর ধরে কাজ করছেন লাবণী পয়েন্টে।

রুবেল বলেন, আগে দিনে আয় হতো ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। চার মাস ধরে তো ঘরে বসা ছিলাম। গত কয়েক দিন আগে থেকে দেখছি পর্যটকরা আসছে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আসা। কিন্তু আয়টা আগের মতো হয় না। দিনে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ২০০ টাকা আয় করতে পারি।

তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলেও ঘুরতে এসে অনেকেই তা মানছেন না। সৈকত এলাকায় নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা টুরিস্ট পুলিশরা জানান, সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য প্রচারণাসহ মাইকিং করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যেন সৈকতে অবস্থান করতে পারে এজন্য ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও এ ব্যাপারে অনেক পর্যটক উদাসীন।

জয়নিউজ/পিডি

 

 

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM