চলছে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর মাস ‘শোকাবহ আগস্ট’। আর এ মাসেই ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) রাতে নগরের চকবাজারের গুলজার মোড়ে চমেকের দুই ইন্টার্ন চিকিৎসকের উপর হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. ওসমান গনি ও চমেক ছাত্র সংসদের (চমেকসু) সাহিত্য সম্পাদক সানি হাসনাইন প্রান্তিক।
এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে চমেক হাসপাতাল ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। এতে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রশ্ন শোকের মাসেও কেন চমেক অস্থির? এর পেছনে কে বা কারা ইন্ধন দিচ্ছে?
আরও পড়ুন: চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক নেতার ওপর ফের হামলা, আহত ২
এ ব্যাপারে জানতে জয়নিউজ কথা বলেছে চমেক ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে চমেক হাসপাতালকে অস্থির করার জন্য একটি গোষ্ঠী চেষ্টা করছে। এর আগে ১২ জুলাই বহিরাগতদের নিয়ে এসে চমেকের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উপর হামলা করা হয়েছিল। তখন আমরা মামলা করলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
আর এই কারণে তারা পুনরায় এ ধরনের ঘটনা করার সাহস পেয়েছে। কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, কারা শান্ত চমেককে অশান্ত করছে— তা খুঁজে বের করা উচিত বলে জানান এ নেতা।
আরও পড়ুন: চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
চমেক সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন ও ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। শুধু তাই নয়, এ সরকারের সময়ে শিক্ষার্থীদের সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে খুব ভালোভাবেই চলছে চমেকের শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু গত এক বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে মারধরের ঘটনা ঘটছে চমেকে। তেমনই এক ঘটনা ঘটে ১২ জুলাই। সেদিন চমেক পরিদর্শনে যান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। উপমন্ত্রী পরিদর্শন শেষে চলে যাওয়ার পর অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে সেখানে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি, বহিরাগতদের জন্যই সেদিন এসব ঘটনা ঘটেছে। বহিরাগতসহ কিছু ছাত্র সেদিন সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছিল। অন্যদিকে আরেকটি গ্রুপও পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছিল। সেই ঘটনার রেষ না কাটতেই আবার চমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উপর হামলা হয়েছে। হামলার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে চমেক হাসপাতাল ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: চমেক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় মামলা
চমেকের এ ঘটনায় শিক্ষা উপমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভন্ন রকমের আলোচনা করছে মানুষ। সেখানে একটি পোস্ট দিয়েছেন চমেকের সাবেক ছাত্র ও সুইজারল্যান্ড প্রবাসী অমি রহমান পিয়াল। পোস্টে তিনি চমেকের পরিবেশ নষ্ট না করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চমেক ছাত্রাবাসে মারামারির ঘটনায় পর চকবাজার এলাকায় ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার সবাই চমেকের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে চকবাজার থানার ওসি রুহুল আমিন।