ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে ডিশ ব্যবসায়ী আবুল হাসানত বেলাল তরুণ ছাত্রলীগ কর্মী দিদারুল ইসলামকে হত্যা করে। এমন অভিযোগ প্রত্যক্ষদর্শী মাহাবুব রাহমান ও তার পিতা নুরুল ইসলামের।
মাহাবুব জয়নিউজকে বলেন, শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় মতিঝর্ণায় প্রাইম স্কুলের দিকে দিদার রিকশা করে আসছিলেন। হঠাৎ রিকশার সামনে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা বেলালের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন ছেলে রিকশাটাকে দাঁড় করায়। এরপর বেলালের লোকজন রিকশা থেকে দিদারকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে প্রথমে পিঠে ছুরি মারে। পরে তার মাথায় এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে তারা।
তিনি আরো জানান, দিদারকে যারা আক্রমণ করে তারা সবাই বেলালের অনুসারী। এদের মধ্যে ছিল মোটা জুয়েল, রফিকুল ইসলাম প্রকাশ রানা, বাটি জুয়েল, আলমগীর, সাজ্জাদ, মুইন, কুত্তা শওকত, সোহাগ, আলাউদ্দীন, সালাউদ্দীন লাভলু, কাইছার, সাইদুল, মোটা মঈনসহ আরো অনেকে।
তিনি বলেন, তখন আমি দিদারকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নিয়ে আসি। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তার ‘ও পজিটিভ’ রক্ত লাগবে বলে জানান। এ সময় আবার বেলালের অনুসারীরা চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকে দিদারকে আক্রমণ করে। সেখানে রক্ত দিতে বাধা দেয় তারা। দিদারের মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা হাসপাতাল ত্যাগ করে। তখন পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করে। এর কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত চিকিৎসক দিদারকে মৃত ঘোষণা করেন।
দিদার ঢাকা উদ্যান সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথমবর্ষের ছাত্র। গত সপ্তাহে তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসেন। নিহত দিদারের বাবা নুরুল ইসলাম একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক। তারা তিন ভাই এক বোন।
নিহত দিদারের বাবা নরুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন, আজ রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) মামলা করবো। আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই। লালখান বাজার ইস্পাহানির মোড়ে দুপুরে দিদারের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি জানান।
স্থানীয় লোকজন জয়নিউজকে জানান, দিদার পড়ালেখায় খুব ভালো ছিলেন। কারো সাথে তার বিরোধ ছিল না। তিনি ভালো বক্তাও ছিলেন। সবসময় মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করতেন। দিদার কিছুদিন আগে সেরা বক্তা হিসেবে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন।
লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম জয়নিউজকে বলেন, দিদার একজন মেধাবী কর্মী ছিলেন ছাত্রলীগের। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মিছিলে ভালো স্লোগান দিতে পারতেন।
তিনি আরও বলেন, বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আ জ ম নাছির উদ্দীনকে জয়ী করতে দিদার সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তখন থেকেই কাউন্সিলর প্রার্থী আজিজ ও ডিশ ব্যবসায়ী বেলালের রোষানলে পড়েন তিনি । এরপর থেকে দিদারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।
এ বিষয়ে বেলাল ও তওহিদ আজিজের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
জয়নিউজ/আরসি