ক্ষমা চাননি প্রবীণ আইনজীবী প্রশান্ত, ১ টাকা জরিমানা, অন্যথায় তিন মাসের জেল

সুযোগ ছিল নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার। তবে নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। অবশেষে আজ (৩১ আগস্ট) এল সুপ্রিম কোর্টের রায়।

- Advertisement -

আদালত অবমাননার শাস্তি হিসেবে ১ টাকা জরিমানা করা হয়েছে প্রশান্তকে।  আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জরিমানা দিতে হবে। অন্যথায় তিন মাসের কারাদণ্ড হবে অথবা তিন বছরের জন্য তিনি আইনজীবী হিসেবে কোনো মামলায় অংশ নিতে পারবেন না। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘বাক স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করা যায় না।’’

- Advertisement -google news follower

প্রশান্তের দুটি টুইটের জেরে গত ১৪ আগস্ট তাঁকে আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করেন শীর্ষ আদালত। ২১ আগস্ট শাস্তি ঘোষণার কথা থাকলেও ২০ আগস্ট তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়। সেই শুনানিতে বিচারপতিদের বক্তব্য ছিল- “সম্পূর্ণ বাক স্বাধীনতার অধিকার বলে কিছু হতে পারে না। আপনি শত শত ভালো কাজ করতে পারেন। কিন্তু সেটা আপনাকে ১০টা খুনের লাইসেন্স দিতে পারে না।’’

কিন্তু তার পরেও ক্ষমা চাইতে রাজি হননি ৬৩ বছরের এই আইনজীবী। বরং বলেন, ক্ষমা চাইলে সেটা হবে আমার বিবেকের কাছে অবমাননা। আদালত যে শাস্তি দেবেন তা মাথা পেতে নেবো।

- Advertisement -islamibank

এর আগে প্রশান্তের আইনজীবী রাজী ধবন আদালতে জানান, প্রশান্ত ভূষণের টুইটে আদালত অবমাননা হয়নি বা বিচারব্যবস্থার অমর্যাদা করা হয়নি।

যে কারণে বিতর্ক

প্রশান্ত ভূষণের দুটি টুইট ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। দামি ব্র্যান্ডের বাইকে চড়া অবস্থায় প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের একটি ছবি প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু বোবদের মাথায় হেলমেট কিংবা মুখে মাস্ক ছিল না। সেই নিয়েই প্রশান্ত ভূষণ টুইটে প্রশ্ন তুলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি হেলমেট এবং মাস্ক পরেননি কেন?

কিন্তু ওই বাইকটি দাঁড় করানো ছিল। ফলে হেলমেট পরার প্রশ্ন ছিল না। পরে এই বিষয়টি সামনে আসায় টুইটের প্রথম অংশের বক্তব্য থেকে প্রশান্ত সরে আসেন। তবে মাস্ক না পরা নিয়ে নিজের অবস্থান বদলাননি। অন্য দিকে দ্বিতীয় একটি টুইটে তিনি বর্তমান এবং অবসরপ্রাপ্ত মিলিয়ে মোট চার বিচারপতির সমালোচনা করেন। তিনি লিখেছিলেন, দেশের শেষ চার প্রধান বিচারপতি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন।

এই দুই টুইটের জেরেই বর্ষীয়ান এই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। ১৪ আগস্ট তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। তার পর ২০ আগস্ট সাজা নিয়ে শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল আদালতে বলেন, প্রশান্ত ভূষণকে সাবধান করে ছেড়ে দেওয়া হোক। তাঁর যুক্তি ছিল, ‘‘বিচারব্যবস্থার প্রশাসনিক উন্নতির জন্য এই ধরনের টুইট করেছেন প্রশান্ত। তিনি তাঁর বাক স্বাধীনতার অধিকারে এই কথা বলেছেন এবং এই মামলাতেও সেই গণতান্ত্রিক অধিকারকে অনুসরণ করুক আদালত। আর সেটা করলে আদালত উচ্চ প্রসংশিত হবে।’’

এ দিন রায় দিতে গিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের ওই সওয়ালকে ‘সুস্থ উপদেশ’ বলেও উল্লেখ করেছেন বিচারপতিরা। বিচারপতি অরুণ মিশ্র ছাড়াও বেঞ্চের সদস্য ছিলেন বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি। তবে রায় দেওয়ার সময় বিচারপতিরা এও বলেছেন, ‘‘বাক স্বাধীনতার অধিকার থাকবে। কিন্তু সেই সঙ্গে অন্যদের অধিকারকেও সম্মান করতে হবে।’’

জয়নিউজ

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM