ঢাকায় সমাবেশে অনুমতি দেওয়ার আগে কথা ছিল ব্যানার-ফেস্টুনের আড়ালে লাঠি-সোটা, রড আনা যাবে না। দখল করা যাবে না ফুটপাত। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না যানবাহন চলাচলে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সীমাবদ্ধ রাখার কথা ছিল জনসভার কার্যক্রম। মিছিলে উস্কানিমূলক শ্লোগান দিয়ে আসা যাবে না সমাবেশস্থলে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালাতে হবে যানবাহন তল্লাশি।
এমন ২২ শর্তে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এসব শর্তের একটিও আমলে নেয়নি তারা। ঢাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ‘কথা দিয়ে কথা না রাখার’এই নীতির মাশুল গুণতে হচ্ছে এবার চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপিকে!
মহানগর বিএনপি আগামী ৪ অক্টোবর বিকেলে লালদীঘি ময়দানে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু ঢাকায় ডিএমপির মতো চট্টগ্রামের সমাবেশে শর্ত ভঙ্গের আশংকা, সমাবেশে জামায়াত-শিবিরের বিশৃঙ্খলা ও সড়ক যোগাযোগে বাঁধা সৃষ্টির শংকা তৈরি হওয়ায় লালদীঘিতে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)।
এ ব্যাপারে সিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমান জয়নিউজকে বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় লালদীঘিতে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া যায়নি। তারা চাইলে তাদের দলীয় কার্যালয়ের মাঠে সমাবেশ করতে পারবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, রোববার বিএনপি ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে পুলিশের নির্দেশনা মানেনি।
চট্টগ্রামেও তারা এ ধরনের নির্দেশনা মানবে বলে মনে হয় না। আবার বিএনপিতে রয়েছে নানামুখী বিভক্তি। পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে শোডাউন দিতে এসে অতীতের মতো সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে তারা। পাশাপাশি জামায়াত শিবিরের অরাজকতার একটি সম্ভাবনাও রয়েছে। তারা আরো জানান, লালদীঘির আশপাশের এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও আদালত রয়েছে। একই সঙ্গে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর সংযোগস্থলও লালদীঘি কোতোয়ালী ঘিরে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে গোটা নগরীতে প্রভাব পড়বে। সার্বিক দিক বিবেচনায় কাজীর দেউড়ীর বিএনপি কার্যালয়ের ভিতরের মাঠে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করবে।
নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান জয়নিউজকে বলেন, সরকার একদিকে গণতন্ত্রের কথা বলে নির্বাচনের আসর বসাতে চায়। অথচ নিজেরা স্বৈরাচারী মনোভাব পোষণ করছে। যার প্রমাণ ৪ অক্টোবর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গণজমায়েতের অনুমতি তারা দিচ্ছে না। বিএনপির জনসমর্থনকে ভয় পায় বলেই এই দমন নীতি গ্রহণ করছে অবৈধ আওয়ামী সরকার।
জয়নিউজ/অভি/ফারুক/জুলফিকার