পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে পাকা ধানের রঙ

পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে পাকা ধানের রঙ। চলছে ধান কাটার উৎসব। দল বেঁধে জুমিয়ারা ধান কাটছে। নতুন ধানে চাষীদের মুখে হাসি। সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলছে ধান কাটার কাজ। যাদের বড় জুম তারা দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাচ্ছে। কাটা ধান মাড়াই করে গোলায় তুলছে কৃষক।

- Advertisement -

খাগড়াছড়ি সদর ইউনিয়নের আট মাইল এলাকার কৃষ্ণপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, ধান কাটছেন জুমচাষী কৃত্রিকা ত্রিপুরা ও বনশ্রী ত্রিপুরাসহ বেশ ক’জন জুমচাষী। নিজেদের পাহাড়ে জুমের আবাদ করেছেন তারা। জুমের পাহাড়ের উপরে নিজেদের বসতবাড়ি। তারা বলেন, প্রায় দেড় একর জায়গা জুড়ে জুম চাষ করেছি। এ বছর জুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানে কোনো রোগ বালাই আক্রমণ করেনি। বৃষ্টি বেশি হলেও ভালো ফলন পেয়েছি। এবার তিন চার রকমের ধানের চাষ করেছি।

- Advertisement -google news follower

বনশ্রী ত্রিপুরা জানান, বিন্নি, গেলুং, কুড়ি, কোম্পানিসহ প্রায় চার রকমের ধান আছে আমার জুমে। বর্তমানে কোম্পানি এবং কুড়ি জাতের ধান পাকায় তা কাটতে শুরু করেছি। বিন্নি ধান সবার পরে পাকে বলে দেরিতে কাটা হবে। ধান কাটার জন্য ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগবে। এরপর চলবে মাড়াইয়ের কাজ। তারপর গোলায় তোলা হবে নতুন ধান। তবে এ বছর উৎপাদিত ধান থেকে আগামী মৌসুমের জন্য বীজ রেখে দেবো।

আট মাইল এলাকার জুমচাষী সুনীল ত্রিপুরা বলেন, জুমে ৩০ রকমের শস্য-সবজি হলেও ধান প্রধান ফসল। ধানের ফলনের উপর সারা বছর আমাদের নির্ভর করতে হয়। ধানের ফলন না হলে সারাবছর খাদ্যাভাব লেগে থাকে। এ বছর আমার জুমে কালা কবরক, কোম্পানি, নাইংচাক, মাউমসিং, চামাসহ কয়েক জাতের ধানের চাষ করেছি। সব জাতের ফলন ভালো হয়েছে। এবার প্রায় ৩ কানি (১২০ শতক) পাহাড়ের ৩ আড়ি (৩০ কেজি) বিভিন্ন জাতের ধান রোপণ করেছি। বৃষ্টি ঠিকমত হওয়ায় এবং নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করায় প্রায় ৩০০ আড়ি ধান পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। নিজেদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধান স্থানীয় বাজারে বিক্রি করব।

- Advertisement -islamibank

কয়েকজন নারী শ্রমিক বলেন, ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে জুমে ধান কাটার কাজ থাকে। প্রতিদিনই কাজ থাকে। দম নেওয়ার অবকাশ থাকে না। দৈনিক ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা মজুরিতে ধান কাটার কাজ নিয়েছি। নিজেদের জুমে চাষ করেছি। তবে বাড়তি আয়ের জন্য অন্যের জুমেও কাজ করি।

কৃষি অফিস সূত্র জানায়, অতীতে এক জমিতে ১০ থেকে ১৫ বছর পর একবার চাষ হতো । কিন্তু বর্তমানে দুই-তিন বছর পরপর একই জমিতে চাষ হচ্ছে। জুমে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক না দেওয়ায় এ বছর ধানের পাশাপাশি মারফার বাম্পার ফলন হয়েছে।

জয়নিউজ/আরসি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM